আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ৪টি কার্যকরী উপায়: ভাবুন, আপনাকে তাড়াতাড়ি অফিস যেতে হবে। আর আপনার ওয়াইফ আপনাকে ব্রেকফাস্ট দিতে একটু লেট করে দিল। যার ফলে আপনার ট্রেন মিস হয়ে গেল। তো এরকম ক্ষেত্রে আপনার কাছে দুটো অপশন থাকে।
নাম্বার ১: আপনি আপনার ওয়াইফকে বকাবকি করতে শুরু করে দিতে পারেন। এটা জানা সত্ত্বেও যে সে সকালে আপনি ওঠার এক ঘণ্টা আগে থেকে উঠে লাগাতার কাজ করে যাচ্ছে।
অথবা নাম্বার ২: আপনি নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করে এত কাজের মধ্যে দিয়েও আপনার ব্রেকফাস্ট টা সঠিক সময়ের ভিতরে দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য তাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করতে পারেন।
যদি আপনি খুশি থাকতে চান তাহলে আপনার মতে কোন অপশনটা বেটার। চলুন দেখে নেই, কি হতে পারে যদি আপনি প্রথম অপশনটাকে বেছে নেন?
ট্রেন তো অলরেডি মিস হয়ে গেছে। এখন আপনার ওয়াইফ কে বকাবকি করলে তো ট্রেনটা ফেরত চলে আসবে না। বরং এতে আপনার এবং আপনার ওয়াইফ দুজনেরই মুড অফ হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি আপনি সেকেন্ড অপশনটাকে বেছে নেন তাহলে এগুলোর কোনটাই হবেনা। কারণ যখন আমরা অন্য কাউকে খারাপ কিছু বলি তখন না, বরং যখন ভালো কিছু বলি বা প্রশংসা করি তখন ভিরত থেকে বেশি খুশী অনুভব করি। তাই যদি আপনি খুশী থাকতে চান তাহলে আমার মতে সেকেণ্ড অপশনটাকে বেছে নেওয়া বেটার।
সুতরাং জীবনে সব সময় খুশি থাকার জন্য এগ্রিমেন্ট নাম্বার ওয়ান “Be impeccable with your words”. মানে খারাপ কথা বলো না।
এবার দুটো ডিফারেন্ট সিচুয়েশন একটু ইমাজিন করুন। একটাতে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড আপনাকে কোন গালি দিলো। আর অন্যটাতে কোনো একজন অজানা অচেনা মানুষ আপনাকে সেই একই গালিটাই দিল। দু’ক্ষেত্রেই কি আপনার রিয়াকশনটা সেম হবে?
একদমই না। যখন আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড আপনাকে গালি দেবে তখন আপনি সেটা ইয়ার্কির ছলে নিয়ে হয়তো হেসে উড়িয়ে দেবেন। কিন্তু সেই সেম গালিটা যখন অচেনা কেউ দেবে তখন আপনি রেগে যাবেন। তো এরকম কেন? কারণ অচেনা কেউ গালি দিলে আপনি সেটাকে পার্সোনালি নিয়ে নেবেন। তার মধ্যে ভালো কিছু খোঁজার বদলে আপনি তার মধ্যে খারাপটাকে বেশি করে খুঁজতে শুরু করবেন। যেটা আলটিমেটলি আপনাকেই বেশি করে দুঃখী করে তুলবে।
তাই জীবনে সব সময় খুশি থাকার জন্য এগ্রিমেন্ট নাম্বার টু “Never take anything personally”. মানে খারাপ কিছু দেখনা।
ধরেন, আপনার ড্রিম হলো শাহরুখ খানের মতো একজন সুপারস্টার হওয়া। আর আপনি পুরো জোসের সাথে ট্রেনের টিকিট কেটে মুম্বাইও পৌঁছে গেলেন। আপনার নিজের প্রতি সম্পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে যে হ্যাঁ, আমিও পারবো এসআরকে এর মতো বড় এক্টর হতে।
কিন্তু সেখানে পৌঁছে আপনি দেখলেন যে বহু বছর আগে থেকে সেখানে আপনার মতই আরো প্রচুর লোক এই একই স্বপ্ন নিয়ে ধাক্কা খেয়ে বেড়াচ্ছে। তারা এখনও তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করে উঠতে পারেননি। এবার এদের মধ্যে থেকে ১০ জন লোক তাদের ফেল হওয়ার গল্পটা আপনার সাথে শেয়ার করলো। আর আপনি চট করে তার গল্পটার সাথে নিজেকে রিলেট করতে শুরু করে দিলেন। আপনি মনে মনে ধরে নিলেন যে এতজন যখন ফেল হয়ে গেছে তাহলে হয়তো আমিও ফেল হয়ে যাব।
আর ঐ একটা ভাবনাই আপনাকে সত্যি ফেল হওয়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে আপনার সাকসেসফুল হতে পারার চান্সও দিন দিন কমে যেতে থাকবে। যেটা আল্টিমেটলি আপনার হ্যাপিনেসকেও পুরোপুরি শেষ করে দেবে।
তো যদি আপনি চান আপনার সাথে এরকমটা না হোক, তার জন্য এগ্রিমেন্ট নাম্বার থ্রি “Never make any assumptions”. মানে খারাপ কিছু শোনো না।
এবার আসা যাক, লাস্ট এগ্রিমেন্টে। ভাবুন, আপনি সারা বছর কিছুই পড়াশোনা না করে দিনরাত বসে শুধু পাবজি খেলে গেলেন। অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে কাটিয়ে দিলেন। আর তারপর যখন আপনি এক্সাম দিতে গেলেন তখন ফেল হয়ে গেলেন। তো তখন আপনার কেমন লাগবে? আপনি দুঃখী হয়ে যাবেন!
আপনার মনের মধ্যে বারবার এই আফসোসটা দেখা দিতে থাকবে ইসস! যদি আমি একটু অন্তত পড়তাম। তাহলে আমার বন্ধুদের মতো হয়তো আমিও পাস করে যেতাম। কিন্তু ভাবুন, আপনি যদি নিজের ১০০% ইফোর্ট দিয়ে সেই এক্সামের জন্য প্রিপারেশন নিতেন এবং তারপরও সেই এক্সামটায় ফেল হয়ে যেতেন। তাহলে কি কখনও আপনার ভিতরে এই আফসোসটা দেখা দিতে পারতো?
ইসস! যদি আমি একটু অন্তত পরতাম। না, কারণ তখন আপনি এটা খুব ভালো করে জানবেন যে আপনি আপনার তরফ থেকে পুরোপুরি চেষ্টা করেছিলেন। তাই আফসোস তৈরি হওয়ার কোন জায়গায় থাকবে না।
তো যদি আপনি কোন কাজে নিজের ১০০% দেন এবং তারপরও যদি ফেল হয়ে যান তাহলে আপনি ততটাও দুঃখী হন না, যতটা দুঃখী আপনি যখন ১০০% না দেন তখন হন।
তাই সব সময় খুশি থাকার জন্য এগ্রিমেন্ট নাম্বার ফোর “Always do your best”. অর্থাৎ করব অথবা মরব।
আমাদের সবার লাইফের আল্টিমেট গোল খুশি থাকতে পারা। আর সেটা একমাত্র তখনই সম্ভব যখন আপনার মন শান্ত থাকবে। আর সেটার জন্য আপনাকে নিজের সাথে এই চারটা এগ্রিমেন্ট করতে হবে।
নাম্বার ১: Be impeccable with your words
নাম্বার ২: Never take anything personally
নাম্বার ৩: Never make any assumptions
নাম্বার ৪: Always do your best
যেমন এই বইয়ের লেখক বলেছেন, প্রতিটা মানুষই একজন শিল্পী। তাই আপনার জীবনের স্বপ্ন হলো আপনার জীবনটাকে একটা সুন্দর শিল্পকলায় পরিণত করা।
সবশেষে আপনার কাছে একটা অনুরোধ, যদি এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটিকে এখনই আপনার প্রিয়জন এবং বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে শেয়ার করুন। কারণ এই আর্টিকেলটি যতগুলো শেয়ার হবে আমি বুঝবো ততজনকে আমি একটু হলেও সাহায্য করতে পেরেছি। ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন – হার না মানা জীবনের গল্প