মানসিক শক্তি বৃদ্ধি

আত্মবিশ্বাসী হওয়া মানসিক শক্তির মানুষ হয়ে মনের সাহস বাড়ান

আত্মবিশ্বাসী হওয়া মানসিক শক্তির মানুষ মনের সাহস বাড়ান: বৃদ্ধির উপায় শিখে মনের সাহস বাড়ান: ৫ টি অভ্যাস মানসিকভাবে শক্তিশালী লোকেদের 13 Things Mentaly Strong People Don’t Do বইটার উপর বানানো এটা প্রথম এপিসোড। আশা করি, আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আজ এই বইটা থেকে Amy Morin কিছু স্মার্ট আইডিয়া দেখে নেওয়া যাক।

মানসিক শক্তিশালী মানুষরা আশা ছাড়ে না

আমাদের শরীরের সবথেকে পাওয়ারফুল যদি কিছু থেকে থাকে তো সেটা হলো আমাদের ব্রেইন। আর সেই ব্রেইনকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কন্ট্রোল করতে পারাটা আমাদের সব থেকে বড় পাওয়ার। কিন্তু কিছু কিছু পরিস্থিতিতে যেমন যখন কেউ আমাদের রাগিয়ে তোলে বা অপমান করে বা এমন কিছু করে বা বলে যেটা আমাদের একেবারেই পছন্দ না তখন আমরা রেগে গিয়ে নিজের ব্রেনের উপর থেকে নিজের কন্ট্রোল হারাতে শুরু করি।

আত্মবিশ্বাসী হওয়ার উপায়

আর সেই কন্ট্রোলটা যদি দিয়ে দিই সামনের লোকের হাতে যার কথা বা কাজ একদমই পছন্দ হচ্ছে না। সে উল্টোপাল্টা বলতে থাকে বা করতে থাকে। আর আমরাও সেই মতো আরো রাগতে থাকি। অর্থাৎ ইনডাইরেক্টলি আমরা আমাদের সব থেকে বড় পাওয়ারটাকে অন্য কারোর হাতে দিয়ে দিই।

মানসিকভাবে শক্তিশালী বা আত্মবিশ্বাসী হওয়া লোকেরা এটা কখনো হতে দেন না। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন তারা কখনও নিজের ব্রেনের উপর থেকে নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে যেতে দেন না। এর মানে এই না যে তারা কখনো রাগেনি না। মানে হল যে- Mentally Strong People Don’t Give Away Their Power, তারা হাল ছাড়ে না কারণ তারা একরকম বেহায়া। জীবনে সুখী হতে হলে একটু বেহায়া আপনাকে হতেই হবে। সবার কথা গায়ে মাখলে তো আর হবে না।

লাইফে কিছু পরিস্থিতি এরকম থাকে যেখানে বাইরে রাগ দেখানোটা দরকার। সেখানে তারা অবশ্যই বাইরে রাগ দেখান। কিন্তু ভিতরে তারা কখনো নিজের ব্রেনের উপর থেকে নিজের কাজল হারিয়ে যেতে দেন না।

মানসিকভাবে দৃঢ় মানুষরা পাছে কথায় কান দেয় না

নার্ভাস দূর করার উপায় নিয়ে ভাবছেন? সব থেকে বড় রোগ কি বলবে সমস্ত লোক। মানসিকভাবে শক্তিশালী লোকেরা যদি কোন কাজ মন থেকে করতে চান এবং সেটা যদি তার নিজের এবং তার আশেপাশের লোকেদের ভালোর জন্য হয় তবে তারা কখনও এটা নিয়ে চিন্তা করে না যে যদি আমি এই কাজটা করি তাহলে লোকে কি ভাববে?

নার্ভাস দূর করার উপায়

বা হয়তো কোন একটা ভুল কাজ আশেপাশের সবাই করছে তাই তাদের সাথে মানিয়ে চলতে বা তাদেরকে ইমপ্রেস বা সন্তুষ্ট করার জন্য মানসিকভাবে শক্তিশালী লোকেরা ভুল কাজটা করতে শুরু করে দেন না। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি কি মিলবে তবে?

যেমন ধরুন, একটা গ্রুপে ৫ জন বন্ধু দাড়িয়ে গল্প করছে। তার মধ্যে চারজনই সিগারেট টানতে টানতে গল্প করছে। এবার বাকি যে একজন সে এমনিতে সিগারেট খায় না। এখন সে যদি মানসিকভাবে দুর্বল হয় তাহলে সে কি করবে!

বাকি চারজনের সাথে মানিয়ে নিতে অর্থাৎ তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য নিজেও এক দু টান দিতে শুরু করবে। না হলে যদি সে বাকিদের মধ্যে আনস্মার্ট বা ব্যাকডেটেড দেখতে লাগে। কিন্তু সে যদি মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়, তবে সে কখনই বাকি চারজনকে সন্তুষ্ট করার জন্য সিগারেটটা হাতে তুলে নেবে না। কারণ মানসিক ভাবে শক্তিশালী লোকেদের অন্যদের এপ্রুভালের দরকার পড়ে না। অর্থাৎ Mentally Strong People Don’t Worry About Pleasing Evering, এরা নিজের গতিতে চলে।

আত্মবিশ্বাসী মানুষরা জীবনে রিস্ক নিতে ভয় পায় না

সাবধান থাকা ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত অবাঞ্ছিত সাবধানতা আমাদের জীবনে এগিয়ে চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় কোন কিছুতেই ইমোশনালি ভয় পেয়ে আমরা লজিককে ছেড়ে দিই।

মানসিক চাপ থেকে মুক্তি

যেমন অনেকে এরোপ্লেনে চড়তে ভয় পায়। এটা ভেবে যদি প্লেন ক্রাশ হয়ে যায়। কিন্তু আসলেই এরোপ্লেনে থেকে গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়ে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। গাড়ির ক্ষেত্রে অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা ৫০০০ ভাগের এক ভাগ। সেখানে প্লেন ক্রাশ হয়ে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা ১১০০০০০০০ ভাগের এক ভাগ। এ রকমই জীবনের অনেক ক্ষেত্রে মানসিকভাবে দুর্বল লোকেরা লজিককে ছেড়ে দিয়ে ইল্লজিক্যাল সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন।

কিন্তু মানসিকভাবে শক্তিশালী লোকেরা ক্যালকুলেটেড রিস্ক নিতে কখনো ভয় করে না। যদি তারা ক্যালকুলেশন করে বোঝেন যে, রিস্কটা তাদের ক্ষমতার মধ্যেই আছে মানে রিস্কটা নিলে যে হ, ওরস্ট পসিবল আউটকামস হতে পারে সেটা থেকে তারা নিজেকে রিকভার করে তুলে আনতে পারবেন। আর রিস্কটার যেটা বেস্ট পসিবল আউটকাম সেটার জন্য এটুকু রিস্ক নেওয়াই যায়। তাহলে তারা সেই রিস্কটা নেওয়া থেকে কখনো পিছপা হন না।

সাহসীরা অতীত না ভেবে বর্তমান নিয়ে কাজ করে

সাহস বৃদ্ধির উপায় কি? যদি আপনি অতীতের যেকোনো স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে শুরু করেন তবে আপনি দুঃখী হতে বাধ্য। অনেকে মনে করে্‌ শুধু অতীতের বাজে কোন স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরলেই আমরা দুঃখী হয়ে পড়ি। কিন্তু আসলে সত্যিটা হলো শুধু বাজে কোন স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরলেই দুঃখী হই না বরং অতীতের ভালো কোনো স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরলেও আমরা একচুয়ালি দুঃখী হতে শুরু করি।

সাহস বৃদ্ধির উপায়

যেমন ধরুন আপনি এখন বসে ভাবছেন, ছোটবেলায় স্কুলে বন্ধুদের সাথে কত মজা হত। এটা অতিতে ভালো স্মৃতি। কিন্তু সমস্যাটা হলো এটা অতীত। সেই সুখের দিনগুলো এখন আর আপনার কাছে নেই। এখন আপনাকে রোজ অফিসে রোবটের মত কাজ করে যেতে হয়। তো ছোটবেলায় স্কুলের দিনগুলো কথা মনে করলে আপনার মনে হবে আপনি খুশি অনুভব করছেন।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই দিনগুলোকে আপনি মিস করছেন। মানে দুঃখী হচ্ছেন। মানসিক ভাবে শক্তিশালী লোকেরা কখনো অতীতের স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেন না। তাই সেটা ভালো স্মৃতি হোক কি খারাপ তারা সব সময় Accept, Learn, Move on এই তিনটা স্টেপ ফলো করে অতীত থেকে নিজেকে বার করে প্রেজেন্ট মোমেন্টে নিয়ে আসেন। বর্তমানকে নিয়ে ভাবাই বুদ্ধিমানের কাজ মানে- Mentally Strong People Don’t Dwelll On The Past, এটা সুখি মানুষের প্রথম কাজ। আত্মবিশ্বাসী হওয়া মানুষরাও এটি মানে।

বুদ্ধিমান মানুষরা এক ভুল বারবার করে না

কথায় আছে ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়। কিন্তু সবাই তো আর ন্যাড়া না। অনেকেরই মাথায় চুল আছে। তাই অনেকেই একবার না বারবার বেলতলায় যায়। অর্থাৎ একই ভুল বারবার করে। তো মানসিকভাবে শক্তিশালী লোকেরা ন্যাড়ার মত হয়। তারা একবার যদি কোন ভুল করে তবে সেটা শিক্ষা নিয়ে পরের বেলায় সেই একই ভুলটাকে রিপিট হতে দেন না। এর জন্য কোন একটা ভুল একবার হয়ে যাওয়ার পর সেটা পোস্ট মডেম করতে হয়।

যে আমি ঠিক কি ভুল করেছিলাম? এরপর এবার এই একই সিচুয়েশনটা আসলে আমি কিভাবে নিজের ভুলটাকে শুধরে নেব বা রিপিট হওয়া থেকে আটকাবো তার একটা প্ল্যান তৈরি করে তারা সেখান থেকে Move on করে জান। হতাশা থেকে মুক্তি মিলবে।

এই যে ভুলটার পোস্ট মডেম করা, সেটাকে নেক্সট বার যাতে রিপিট না হয় তার জন্য প্ল্যান তৈরি করা, এগুলো করতে করতে অনেকটা মেন্টাল অ্যাফোর্ট এর দরকার পড়ে। যেটা একমাত্র মানসিক ভাবে শক্তিশালী লোকেরাই যোগাতে পারে।

মানসিক ভাবে দুর্বল লোকেরা এসব কিছুই করেন না। তারা ভুল হওয়ার পর আফসোস করেন। আবার সেই একই ভুল করেন এবং আফসোস করেন দ্বিতীয়বার সেই একই ভুলটা আবার কি করে করলেন। সব থেকে মজার ব্যাপার আবারও সেই একই ভুল করে তৃতীয় বার আফসোস করেন এবং এবার নিজের ভাগ্যের উপর সম্পূর্ণ দোষটা চাপিয়ে দেন। যত দোষ ভাগ্য ঘোষ।

এখনো এই বইটা থেকে আরও পাঁচটা স্মার্ট আইডিয়া শেয়ার করার বাকি থেকে গেল। তা নিয়ে আবার লিখবা অন্য কোন এক এপিসিউডে। লেখাটি পড়ে কেমন লাগলো তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আর ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও অনুপ্রেরণা দিন।

আরও পড়ুন- দুশ্চিন্তা মুসিবত ও পেরেশানী দূর করার সহজ উপায়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *