ধনী হওয়ার সহজ উপায়

ধনী হওয়ার সহজ উপায় – অল্প বয়সে ধনী ও টাকাওয়ালা হোন | How To Become Rich

ধনী হওয়ার সহজ উপায় – অল্প বয়সে ধনী ও টাকাওয়ালা হোন: ‘THE RICHEST MAN IN BABYLON’ BY GEORGE S. CLASON. এই অল টাইম বেষ্ট সেলিং ফাইন্যান্সিয়াল ক্লাসিক বইটিতে অথর আমাদের সাথে দুজন বন্ধুর কাহিনী শেয়ার করেছেন। যার মধ্যে একজনের নাম বানসির, যে ঘোড়ার গাড়ি বানাতো।

আর একজনের নাম কবি, যে একজন মিউজিসিয়ান ছিলো। তাদের ব্যবস্যা খুব ভালোই চলছিলো। কিন্তু তবু তারা কিছুতে টাকা জমিয়ে উঠতে পারছিলো না। আপনার ও কি এই একই সমস্যা তো একদিন কবির মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। ওরা দুজন মিলে ওদের ছোট বেলার বন্ধু আরকাদের সাথে দেখা করতে যাওয়ার সিন্ধান্ত নিলো। যে তখন বেবোলিনের সব থেকে ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলো। তো প্লান মতো তারা বেরিয়ে পরে এবং আরকাদের সাথে দেখা করার সুযোগ পায়।

আরকাদের সাথে দেখা করে তারা আরকাদকে জিজ্ঞেস করে ‘তোমার কি মনে হয় আমরা এতো পরিশ্রম করা সত্বেও কোনো ভাবে টাকা জমিয়ে ধনী হয়ে উঠতে পারছিনা কেনো?’

ধনী হওয়ার সহজ উপায়

তো এই প্রশ্নের উত্তরে আরকাদ তাদের যে লেসেনগুলো শেখায় যেটাকে আরকাদ ‘7 cures to a lean purse’ বলতো। সেগুলো ছিলো কিছু এরকম অর্থ সঞ্চয় করার অভ্যাস – যেগুলোকে যে কেউ চাইলে ফলো করে কিছু দিনের মধ্যে ধনী হয়ে উঠতে পারে। তো আজ এই আর্টিকেলে আমি আপনার সাথে ‘THE RICHEST MAN IN BABYLON’ বইটি থেকে সেই ৭ টি গোপন স্মার্ট আইডিয়া শেয়ার করবো।

স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ১: Save at least 10% of your earnings

এই বইটির সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এর প্রথম পার্টটা। এক সময় আরকাদের অবস্থাও ঠিক বানসির আর কবির মতোই ছিলো। আরকাদ তাদেরকে গল্প করে বলে যে, এক সময় আরকাদও একজন লেখকের কাজ করতো। কিন্তু কিছুতেই ধনী হয়ে উঠতে পারছিলো না। তাই সে তখন কার একজন ধনী ব্যক্তির কাছে উপদেশ চেয়েছিলো। আরকাদ সেই ধনী ব্যক্তিটিকে একটি সুন্দর মাটির এস্থব্য লিপি বানিয়ে দেওয়ায় সেই ধনী ব্যক্তিটি খুশি হয়ে আরকাদের সঙ্গে তার ধনী হওয়ার সিকরেট গুলো শেয়ার করেছিলো।

তার মধ্যে সব থেকে মূল্যবান যে গোপন কথাটি ছিলো সেটা হলো – সেই ধনী ব্যক্তিটি তখনেই ধীরে ধীরে ধনী হয়ে উঠতে শুরু করেছিলো যখন সে ঠিক করে নিয়েছিলো যে সারা মাসে সে যত টাকা রোজগার করবে তার মধ্যে থেকে একটা অংশ সে আগে নিজেকে পে করবে। অর্থাৎ কোন রকম কোনো খরচা করার আগে সে নিজের জন্য আগে একটা অংশ সরিয়ে রাখবে।

যেটা যে কেউ চাইলেই ফলো করতে পারে। তাই মাসের শেষে পে চেকটা হাতে পাওয়ার পর আপনার প্রথম কাজ হলো রোজগারের অন্ততপক্ষে ১০% সবার আগে সরিয়ে জমিয়ে রাখা। বইটির লেখক বলেছেন, যদি আপনি প্রতি মাসের রোজগারের মাত্র ১০% জমিয়ে রাখেন তো তাতে আপনার সারা মাসের খরচ চালাতে তেমন বড় কোনো সমস্যা হবে না এবং আস্তে আস্তে আপনি সেই মত ঠিক ম্যানেজও করে নিতে পারবেন।

যদি মাসের শুরুতে আপনার এ কথাটি মাথায় না থাকে, তাহলে আপনি অন্য কোনো উপায়ের সাহায্যও নিতে পারেন। যাতে প্রতি মাসে সেটা অটোম্যাটিক্যালি আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে ডিডেক্ট হয়ে আলাদভাবে জমা হয়ে যায়। এর জন্য আপনি ‘EasyPlan’ এপটি ব্যবহার করতে পারেন। ইজি প্লান টাকা শেভ করার একটা ভীষণ স্মার্ট উপায়। ইজি প্লান এপে আপনি আপনার গোল সেট করলেই এই এপ সমস্ত কিছু ক্যালকুলেট করে আপনাকে বলে দিবে যে তার জন্য আপনাকে মাসে কত টাকা করে জমাতে হবে।

এখানে রেগুলার ব্যাংকের থেকে দিগুণ অবদি ইনটারেস্ট পেতে পারেন। কারণ এখানে আপনার টাকা একটা লো রিস্ক আইসি আইসি আই প্রটেনসিয়াল লিকুইড ফান্ডে ইনভেস্ট হবে। লো রিস্ক কারণ এতে আপনার টাকা শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট হবে না। আর ইচ্ছে মত ইন্সট্যান্টলি আপনি আপনার টাকা তুলেও নিতে পারবেন। আর এরকমও কোন বাধ্যবাধগতা নেই। যে আপনাকে প্রতি সপ্তাহে বা মাসে টাকা জমা করতেই হবে। আপনি আপনার সুবিধা মত টাকা জমা করতে পারবেন। ইন্সটলম্যান্ট মিস হলে তার জন্য কোন পেনান্টি নেই। আপনি চাইলে মাত্র একশ টাকা দিয়েও শুরু করতে পারেন। আর তারপর কোন মিনিমাম নেই।

স্মার্ট আইডিয়া ২: Spend Less Than You Make

এটাতো কমনসেন্সই বলে, কিন্তু কমনসেন্সটাই সবচেয়ে বেশি আনকমন। বেশিরভাগ যুবক ছেলেমেয়েরাই এটা স্বীকার করবে যে, তারা যত টাকা রোজগার করে তার পুরোটাই তারা প্রতিমাসে খরচ করে ফেলে। তারা মনে করে যে তাদের ইনকাম বাড়লে হয়তো তারা টাকা জমাতে পারবে। তো তাদেরকে অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে তাদের ইনকাম বাড়লেও টাকা তখনো তারা জমাতে পারবে না। কারণ তখন তাদের খরচটাও বেড়ে যাবে। আর আল্টিমেটলি মাসের শেষে ব্যাংক একাউন্ট গড়ের মাঠ হয়ে যাবে।

এই বইতে একটা কথা বলা আছে, যে টাকা আপনি রোজগার করছেন সেই সব টাকাই আপনার না। অর্থাৎ যদি ধরুন আপনি মাসে ১০,০০০ টাকা রোজগার করছেন, তার মানে এই না ঐ ১০০০০ টাকাই আপনার। কারণ টাকাটা হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই তো আপনি ঘর ভাড়া, বিল, জামা-কাপড় এই সবের পিছনে খরচ করে ফেলেন। আসলে সেই টাকাগুলো আপনার থাকে না বরং তাদের হয়ে যায় যাদেরকে আপনি পে করে খরচ করে দেন।

যখন আপনি যত টাকা মাসে রোজগার করেন তার থেকে কম খরচ করতে শুরু করবেন তখন আপনার জীবনে অনেক পজিটিভ পরিবর্তন লক্ষ করতে পারবেন। যেমনঃ

  • আপনার যদি কোনো ধার বাকি থাকে সেগুলো আস্তে আস্তে শোধ হতে শুরু করবে।
  • আপনি টাকা জমাতে শুরু করতে পারবেন।
  • আপনার উপর থেকে চাপ কমতে শুরু হবে।
  • আপনি সেই কাজগুলোতে পা বাড়াতে শুরু করবেন যেগুলোর রাস্তা এতদিন আপনার জন্য বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল।

তো এই স্মার্ট আইডিয়াটাকে অবশ্যই মাথায় রাখুন। রোজগারের থেকে কম খরচ করুন। রোজগার আর খরচের মধ্যে পার্থক্যটাকে বড় করার জন্য যা যা আপনি পদক্ষেপ নিবেন সেগুলোর প্রতিটা আপনাকে আরো ভালোভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করবে।

স্মার্ট আইডিয়া ৩: Use Saved Money To Make More Money

ধনী হওয়ার জন্য এটাকে ‘গোল্ডেন রুল’ বলা হয়। যেটা ‘সম্পদ কিভাবে বাড়ানো যায়’ এই টপিকের উপর লেখা সমস্ত বইগুলোতে বলা রয়েছে। প্রতিটা টাকাকে আপনি একটা ছোট সৈনিকের মত ভাবতে পারেন। প্রতিদিনই তাদের মিশন হলো এরকম আরো সৈনিকদের আটক করা এবং তাদেরকে নিয়ে একসাথে কাজ করে আরো সৈনিকদের আটক করা।

বেশিরভাগ মানুষই তাদের সমস্ত টাকা এরকম জিনিসের পিছনেই ব্যয় করে ফেলেন যেগুলো সময়ের সাথে সাথে জং ধরে যায়। নয়তো পচে যায় বা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়ে মূল্য সম্পূর্ণ শূণ্যতে নেমে আসে। যেমন বাড়ি, গাড়ি, জামা-কাপড়, সাজাগোজার জিনিস – এগুলোর পিছনে টাকা খরচ করে আপনি অন্যকে ধনী বানানোর কাজটা করছেন।

আর, যারা বুদ্ধিমান লোক তারা কি করছেন। তারা যতটা সম্ভব টাকা সেভ করে সেটাকে এরকম জায়গায় কাজে লাগাচ্ছেন। যাতে সেখান থেকে আরো টাকা রোজগার হতে পারে। সাধারণত সেটা এরকম কিছুতে যেটার ব্যাপারে তাদের জ্ঞান রয়েছে। অথবা যেটাতে তারা পারদর্শী। যেমন একজন বাস্কেট বল প্লেয়ার আরো নতুন নতুন বাস্কেট বল অনুশীলন শেখার জন্য টাকা খরচ করছে। একজন বিজনেস ম্যান হয়তো নতুন কোনো ছোট বিজনেস এর পিছনে খরচ করছে।

যাতে সেখান থেকে আরো টাকা রোজগার হয়। ওয়ারেন বাফেট একদম ছোট বেলা থেকে এ জিনিসটা করেছিলেন। তিনি ছোট বেলায় একটা দোকান থেকে সোডা কিনে সেগুলো গরমের সময় প্রায় দিগুণ দামে বিক্রি করতেন। এভাবে আস্তে আস্তে তিনি কিছু পেনবল মেশিন কেনার টাকা জোগার করে কিনে ফেলেন এবং বিভিন্ন রেস্টূরেন্টে সেটাপ করে দেন। সেখান থেকে যা লাভ হতো তা ৫০/৫০ তিনি রেস্টুরেন্ট মালিকের সাথে ভাগ করে নিতেন। এভাবে তিনি আস্তে আস্তে বড় থেকে বড় বিজনেসের দিকে এগিয়ে যান এবং আজ তিনি বিশ্বের তৃতীয় একজন ধনী ব্যক্তি।

স্মার্ট আইডিয়া ৪: Avoid investments that sound too good to be true

জীবনে বড় বড় স্বপ্ন থাকা এবং লোভের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এ দুইটি জিনিসের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। হ্যা, এটা ঠিক যে মাত্র ১০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে আপনি একটা কোটি টাকার বিজনেসও দাড় করিয়ে দিতে পারেন। এর আগেও অনেকে সেটা করেছে।

কিন্তু তার মানে এই না যে, কেউ এসে আপনাকে বললো যে একবার শুধু ১০,০০০ টাকা দাও আর তার বদলে আপনি এক কোটি টাকা পাবেন। আর সেটা আপনি বিশ্বাস করে নিলেন। এগুলো প্রায় সবই স্ক্যাম। বিশ্বের বিভিন্ন কোটিপতি ইনভেস্টারা যেমন সেমওয়ালটন,ওয়ারেন বাফেট এনারা তাদের ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে ভীষণ কঞ্জারভেটিভ। এনারা এক লাফে হাই রিস্ক নিয়ে গাছের মাথায় না ওঠে আস্তে আস্তে লো রিস্কে ওঠাটা বেশি প্রিফার করেন।

তাই যখন কেউ আপনাকে স্ক্যামের ব্যাপারে বলছে যেটা ম্যাজিকের মত ফেরত দিবে সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। সব সময় না হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো স্ক্যাম হয়। লেখক আরো সাবধান করেছেন, যদি আপনি আপনার টাকা এরকম কোনো বিসনেজে ইনভেস্ট করেন। যেটার ব্যাপারে আপনার কোন জ্ঞানেই নেই বা এরকম লোকের পিছনে ইনভেস্ট করেন যারা তদের কাজে একে বারে দক্ষ না তবে সেই টাকা আপনি হারাবেন।

  • উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি রিয়েলস্টেট বিজনেস এর ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তো রিয়েলস্টেট এ টাকা লাগানো অনেকটা অন্ধকারে ঢিল মারার মতো। কারণ এখানে আপনার মিসলেড বা মিসগাইডেড হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। শুধু মাত্র তাদের কাছ থেকেই উপদেশ নিন যারা সেই বিষয়ে দক্ষ। যদি আপনি তাদের কথা অনুযায়ী টাকা লাগিয়ে বসেন যারা আপনি যেটা শুনতে চান সেটাই আপনাকে বলছে। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানে টাকা লাগাতে বলছে সে প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না। তবে আপনি আপনার টাকা হারাবেন।

উদাহরণ দিয়ে যদি বলি এটা একটা দর্জির কাজ থেকে গয়নার ব্যাপারে উপদেশ নেওয়ার মত। দর্জি গয়নার ব্যাপারে কি জানে? কিছুই না। তো আপনি যদি গয়নার পিছনে ইনভেস্ট করার কথা ভাবছেন। তো শুধু মাত্র একজন দক্ষ জহরির কাছেই উপদেশ নিন, যে সেই ফিল্ডে অনেক টাকা অলরেডি ইনকাম করেছে।

স্মার্ট আইডিয়া ৫: Own Your Home

এই বইটিতে লেখক আমাদের উপদেশ দিয়েছেন, আমরা যে বাড়িতে বসবাস করি সে বাড়িটা যেন আমাদের কেনা থাকে। যাতে শুধু মাত্র খরচ কমে সেই জন্য নয় বরং তার সাথে যেন জীবনে একটা শান্তির স্থান তৈরি হয় সেই জন্য। আমাদের বেশির ভাগের কাছেই নিজের একটা বাড়ি কেনা স্বপ্ন সত্যি করার মতো। যদিও তার জন্য হয়তো আপনাকে ব্যাংক থেকে লোন নিতে হতে পারে। যেমন লেখক বলেছেন, যদি সে মাসিক ইন্সটলমেন্টের পরিমাণ আপনি যা রোজগার করছেন তার থেকে খরচের পরিমাণকে বেশি না করে দেয় তাহলে আপনি এগোতে পারেন।

জীবনে একটা শান্তির জায়গা তৈরি করার জ্ন্য যাতে আপনাকে আপনার রোজগারের উর্দ্ধে গিয়ে মাসিক ইন্সটলম্যান্ট পে না করতে হয়। সেই ব্যবস্থাটা করা আপনার প্রথম লক্ষ হওয়া উচিত। কারণ যখন আপনার নিজের নামে একটা বাড়ি থাকবে তখন আপনার ফ্যামিলির সবাই অনেক বেশি শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে পারবে। আপনার ছেলে মেয়েরা তাদের ইচ্ছে মত আনন্দ করে খেলে বেরাতে পারবে। একটা ভাড়া বাড়িতে থাকলে হয়তো আপনি নিজের ঘড়টাকেও নিজের ইচ্ছেমত সাজাতে পারবেন না।

এরকম বিভিন্ন বাঁধার মুখোমুখি হতে হবে। তাই নিজেদের বাড়িতে থাকতে পারলে আপনার পরিবারের সবাই অনেক বেশি খুশি থাকতে পারবেন। তাছাড়া আপনার নিজের নামে বাড়ি থাকলে প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে লোন নিতেও সুবিধা হবে। সর্বোপরি, যদি আপনার নিজের নামে একটা বাড়ি থাকে,আপনার খরচ তো কমবেই তার সাথে আপনার লাইফও অনেক বেটার হয়ে উঠবে।

স্মার্ট আইডিয়া ৬: Have a retirement plan

আপনি কত দিন আর কাজ করতে পারবেন! একটা সময় আসবে তখন আপনি টাকা ইনকাম করার ক্ষমতা হারাবেন। সেটা কোন অসুস্থতা, কোনো আঘাত বা যদি আপনি ভাগ্যবান হন তো হয়তো বার্ধ্যকের কারণে আপনাকে অবসর প্রাপ্ত হতে হবে। তাই সেই মত একটা প্লান তৈরি করা অত্যান্ত দরকার। যখন আপনি রোজগার ক্ষমতা হারাবেন তখন আপনার সংসার চালানোর জন্য আজ থেকেি আপনাকে একটা রিটায়ারমেন্ট প্লান তৈরি করতে হবে।

এই বইতে আনসান নামের একজনের গল্প এখানে শেয়ার করেছেন। আনসা্ন প্রতি সপ্তাহে দুইটা করে রূপোর মুদ্রা আট বছর ধরে একজন মানি লেন্ডারের কাছে জমিয়ে ছিলো। ইন্টারেস্ট রেট ছিল চার বছরে ২৫% অর্থাৎ ৬.২৫% পার ইয়ার। আট বছর পর আনসানের ১০৪০ টা রূপোর মুদ্রা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। এতে আনসান নিজের প্রতি গর্ব অনুভব করে এবং আরকাদকে সে এি বিষয়ে জানায়। আরকাদ তাকে উপদেশ দেয় আরো বারো বছর এভাবে আরো দুইটা করে রুপার মুদ্রা জমা করতে। ২০ বছর পরে আনসানের টোটাল মুদ্রার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪০০০টি। তো আপনার ও উচিত আরকাদের উপদেশটা শোনার। আরকাদ আপনাকে আর কিছু না সেই কমপাউন্ট ইনটারেসটের ম্যাজিকটাই শেখাচ্ছে।

স্মার্ট আইডিয়া ৭: Invest in your ability to earn more

আরকাদ একটি গল্প বলে, যখন একজন যুবক তার কাছ থেকে টাকা ধার করতে এসেছিলো। যখন আরকাদ তাকে টাকা ধার চাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করে সে যুবক তাকে জানায় তার বিল পে করার জন্য টাকাগুলো তার দরকার। আরকাদ যখন জিজ্ঞেস করে তার কাছে বিল পে করার মত টাকা নেই কেনো? তখন সেই যুবক আরকাদকে বলে, কারণ তার খরচা চালানোর মত সে যথেষ্ট রোজগার করতে পারে না।

আরকাদ তাকে পরিস্কার ভাষায় বলে, তোমার এখন টাকা দরকার না বরং তোমার এখন যেটা দরকার সেটা নিজের টাকা রোজগার করার যোগ্যতাটাকে বাড়ানো এবং সে সেই যুবককে টাকা ধার দিতে পারায় মানা করে দেয়। ঠিক যেমনটা ব্যাংকও তার সাথে করেছিল। এখান থেকে আমরা দুইটা ভালো জিনিস শিখতে পারি।

  • নাম্বার ১: এরকম লোকদের কখন টাকা ধার দেওয়া উচিত না। যারা সেই টাকাটা পরিশোধ করতে পারবে না। তার পরিবর্তে তারা যাতে তাদের রোজগার বাড়াতে পারে সেরকম কোন উপায় খুঁজে পেতে তাদের সাহায্য করা উচিত।
  • নাম্বার ২: বোকার মত টাকা ধার নেয়াও উচিত না। প্রতিনিয়ত আমাদের রোজগার বাড়ানোর বেস্ট উপায় হলো নিজের উপর টাকা ইনভেস্ট করা। অর্থাৎ নিজের সময় এবং টাকা দুটোই সঠিক ভাবে নিজের দক্ষতা, জ্ঞান এবং নিজের রোজগার করার বিভিন্ন যোগ্যতা বাড়ানোর পিছনে ইনভেস্ট করা উচিত।

বেশির ভাগ লোকেদেরই শেখার পালা ২১ বছর বয়সে স্কুল কলেজ ছাড়ার সাথে সাথে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু কিছু মানুষ থাকেন যারা সারাজীবন শিখতে থাকেন। এতে সময়ের সাথে সাথে অন্যদের তুলনায় তাদের কাছে একটা বড় এডভান্টেস তৈরি হয়।

যেখানে একজন সাধারন মানুষ সারাদিন কাজ করার পর বাড়ি ঢুকে টিভি চালু করে বসে পরে। নিজেকে ইম্প্রুভ করার জন্য কিছুই করে না বরং বোকা বাক্সের সামনে বসে নিজেকে আরো বোকা করে তোলে। সেখানে আপনি প্রতিদিন একটু একটু নিজেকে ইম্প্রুভ করে তাদের থেকে নিজেকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

এবার যদি আমি আপনাকে এই পুরো বইটার মূল কথা দুই লাইনে সংক্ষিপ্ত করে বলি, তো সেটা হলো আপনি যা রোজগার করছেন কমপক্ষে তার ১০% সেভ করুন এবং সেটাকে এমন জায়গায় ইনভেস্ট করুন যেটার ব্যাপারে আপনার জ্ঞান আছে। যাতে সেখান থেকে আরো টাকা রোজগার হয়। এটা সুনিশ্চিত করুন, যেন আপনার প্রতিটা টাকা আপনার জন্য কাজ করে চলে। অবশ্যই এটা মাথায় রেখে, যাতে টাকা বাড়ার বদলে যেন কখনো কমে না যায়।

আরো পড়ুন- স্মার্ট ওয়ার্ক ও টাইম ম্যানেজমেন্ট কিভাবে করবেন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *