পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট হতে পারে তোমার সফলতা: এত পড়ছি তবুও ফেল করছি। দিনরাত পড়ছি, তবুও রেজাল্ট ভালো হচ্ছে না। বাবা মা এত কষ্ট করছে আমার জন্য তবুও তাদেরকে ভাল রেজাল্ট উপহার দিতে পারছি না। নাহ! আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আমি লুজার, আমি অপদার্থ। আমি খারাপ ছাত্র। এই কথাগুলো মাথায় আসে না এরকম কোন মানুষ নেই এ পৃথিবীতে। তুমি আমি কেউই এর বাইরে নই।
সফলতা কাকে বলে ?
কিন্তু এত হতাশা আর চিন্তার পরেও আমরা সফলতার পেছনে ছুটি। আচ্ছা, তুমি কি জান সফলতা কি? কেউ হয়তো বলবে -পরীক্ষায় ফাস্ট হওয়া, কেউ বলবে এস এস সি তে প্লাস পাওয়া, কেউ বলবে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া, আবার কেউ বলবে ভাল স্যালারির চাকুরী করা, গাড়ি বাড়ী করা ইত্যাদি আরো কত কি?
আসলে এগুলো কোনোটাই সফলতা নয়, এগুলো সফলতার অংশ মাত্র। সফলতা নির্দিষ্ট কিছু অর্জন নয়। সফলতা একটা ভ্রমণ। আজকে যদি এইচ এস সি তে প্লাস পাওয়া তোমার কাছে সফলতা মনে হয়, তবে কালকে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াটা তোমার কাছে সফলতা মনে হবে। আসলে সফলতা একটি ভ্রম বা মরীচিকা। তাই সফলতার পিছনে না ছুটে চমৎকার কিছুর পিছনে ছুট।
সত্যি বলতে আমরা অন্ধ অনুকরণ পছন্দ করি। অমুক ছেলেটি ক্লাসের ফাস্ট বয়, তাই আমাকেও ফাস্ট হতে হবে। আমার বন্ধু মেডিক্যালে পড়বে, তাহলে আমিও পরব।
আসল কথা হলো বেশিরভাগ যেদিকে যায়, আমরাও সেদিকে যেতে পছন্দ করি। ঠিক ভেড়ার পালের মত। সবার সামনের ভেড়াটি যেদিকে যায়, পিছনের ভেড়াগুলোও ঠিক একই পথে যায়।
একবার অনেকগুলো ভেড়া একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। সেই ঘরে ৭ টি দরজা ছিল। ৭ টি দরজাই এক সাথে খুলে দেয়া হল। দেখা গেল যে, প্রথম ভেড়াটি যে দরজা দিয়ে বের হল, বাকিগুলোও ঐ একি দরজা দিয়ে বের হওয়ার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিল। অথচ বাকি ছয়টা দরজা খোলা থাকার পরেও কোন ভেড়া সেই দরজাগুলো দিয়ে বেরোয়নি। আমাদের মানুষের মাঝেও ঠিক একি চিন্তাভাবনা। বেশিরভাগ যেটা করবে, আমিও সেটা করব। আর করতে না পারলেই শুরু হয় হতাশা।
নিজেকে আবিষ্কার কর
কিন্তু কখনো কি তুমি নিজেকে প্রশ্ন করেছ, কেন তুমি এটা করবে? এটার বিকল্প কি করা যায়? কোনটা আমি বেশি ভাল পারব? আমার সর্বোচ্চ ক্ষমতা কতটুকু? আমি কিভাবে সেটাকে হাসিল করবো? এই প্রশ্নগুলো কি কখনো নিজেকে করেছো? খুঁজেছ কি এগুলোর উত্তর?
তোমরা বেশিরভাগই এই প্রশ্নগুলো করতে ভয় পাও। অথচ এই প্রশ্নগুলো তোমাকে সফলতার রাস্তায় দ্রুত নিয়ে যাবে। অন্যের অনুকরণ, অনুসরণ করা ছেড়ে দাও। নিজেই নিজের নতুন রাস্তা তৈরি কর। এই পৃথিবী তোমার কাছে হেরে যাবে। সামান্য মানসিক শক্তি তৈরী কর। নিজেকে প্রশ্ন কর, নিজের বুদ্ধিমত্তাকে খুঁজে বের কর। কাজে লাগাও। যত বেশি প্রশ্ন করবে তত বেশি আইডিয়া তোমার মাথায় আসবে।
তোমার ব্রেনের পজিটিভ মেন্টাল মাসল শক্তিশালী হবে। যেহেতু ব্রেন সকল চিন্তাভাবনা আর আইডিয়ার উৎস সেহেতু ব্রেন একটু অনুপ্রেরণা আর প্রশ্ন করার ক্ষমতা পেলে এটি সুপার এক্টিভ হয়ে যাবে। ছোট থেকে ভয় পেতে পেতে, আর মানুষ কি বলবে এই ভয়ে ব্রেন ভীত হয়ে কিছুটা ডি এক্টিভ হয়ে পড়ে। একজন সফল আর ব্যর্থ ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য ঠিক এতটুকু যে সফল ব্যক্তির ব্রেন এক্টিভ। আর এটা একবার করতে পারলে কেউ তোমাকে দুর্বল করতে পারবে না। তুমি নিজেই তোমার রাস্তা তৈরী করে ফেলবে।
কিছুটা বেহায়া হওয়ার চেষ্টা কর। কে কি বলল, আর কে কি ভাবল এগুলো নিয়ে চিন্তা করা একটু একটু করে বাদ দাও। নিজেকে নিজের অভিভাবক মনে করা শুরু কর। নিজের হাত খরচ নিজেই কিভাবে করা যায় তা নিয়ে ভাব। তুমি নিজেই জান না তোমার ব্রেনের ক্ষমতা কত?
সফলতা পাওয়ার উপায়
এই পৃথিবীতে সফলতার কোনো প্রতিযোগীতা নেই। তুমি চাইলে তোমার কাংখিত স্বপ্নে সফল হতে পার। শুধু দরকার ঘুরে দাঁড়ানো আর নিজেকে প্রশ্ন করা। এই দুটি কাজ করতে পারলে তুমি এমনিতে মানসিকভাবে শক্ত হয়ে যাবে, পরিশ্রমী হয়ে পরবে। আর সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন তুমিও সফল ব্যক্তিদের কাতারে দাঁড়িয়ে যাবে। পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট এটা একটা সময়ের স্রোত মাত্র। জীবনের টার্নিং পয়েন্ট তোমার ব্যর্থতা।
শুধু এটিকে কাজে লাগাও। তোমার কাজে অন্যরা হাসার আগে নিজেই নিজেকে নিয়ে হাসো। নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত কর যে অন্যের কোন কিছুতে তোমার যায় আসে না, কে কি বলল তুমি কেয়ার কর না। You don’t care. একদিনে কিছু হয় না, চেষ্টা করতে করতে হয়ে যাবে। যার উদাহরণ আমি নিজেই-
ভিডিওটি তোমার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও অনুপ্রেরণা দাও। ভাল লাগলে একটি লাইক দিয়ে তোমার মতামত কমেন্ট করে জানাও। আর যদি তুমি এই চ্যানেলে নতুন হয়ে থাক তাহলে এখনি চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে নাও। আর পাশে থাকা বেল বাটনটি প্রেস করে দাও। এরপর কোন ভিডিওটি তুমি দেখতে চাও তা আমাদের কমেন্ট করে জানাও। তোমাদের সাহায্য করতে পারাটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য।