কীভাবে হস্তমৈথুন আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? একটু সুখের আশায় আমরা কত কিছুই না করি। কিন্তু সুখ যেন অমাবস্যার চাঁদ। এই আসে তো এই হারিয়ে যায়। একজন মানুষ তার জীবনে চারটি উপায়ে সুখি হতে পারে। উপায় চারটি হলো-শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক। প্রত্যেক উপায়ের স্থায়িত্ব আলাদা আলাদা।
এপিজে আব্দুল কালাম কে একবার এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি বিয়ে করেননি কেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন- কাজের মধ্যে এতটাই ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম যে বিয়ের কথা মনেই ছিল না। আসলে আধ্যাত্মিক লেভেলের সুখ পেলে শারীরিক সুখের কথা মনেই পড়ে না।
আপনি কোন উপায়টি বেছে নিতে পছন্দ করবেন? আসলে প্রতিটি উপায় আমাদের সুখি হওয়ার জন্য জরুরি। তবে যদি প্রকৃত সুখ ও সুখের স্থায়িত্ব পেতে চাই, তবে মানসিক উপায়ের কোন বিকল্প নেই। সেক্স ও নেশাদার দ্রব্য আমাদের শারীরিক আনন্দ দিয়ে থাকে, তবে এটা শুধু কিছু সময়ের জন্য।
হস্তমৈথুন আসক্তি
ধরুন, আপনি আপনার পছন্দের ঘড়িটি হারিয়ে ফেলেছেন, সেটা পাওয়ার জন্য আপনি হন্যি হয়ে খুজে বেড়াচ্ছেন, অবশেষে ঘড়িটি পেয়ে গেলেন। তারপরও কি আপনি ঘড়িটি খুজবেন? আমার মনে হয় উত্তরটা সবসময় না’ই হবে! কারণ আপনার উদ্দেশ্য হাছিল হয়েছে।
তাই আর খোজারও দরকার নেই। কিন্তু সেক্স ও নেশাদ্রব্য আপনি প্রতিসময়ে খুজছেন। আপনি ভাবছেন যে, আপনি হয়তো সুখের নাগাল পেয়ে গেছেন, যদি পেয়েও যান, তাহলে খুজছেন কেন?
মরীচিকার মত সুখের পিছনে দৌড়াচ্ছেন, কিন্তু সুখতো আর ধরা দেয় না। বিনিময়ে হতাশা, কষ্ট, একাকিত্ব আপনাকে খুজে বেড়াচ্ছে। ধীরে ধীরে এগুলো আপনাকে আত্মহত্যার প্রবণতা, Hyper Sexual Disorder বা Sex Addiction এর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
সমস্যা যেখানে আছে, সেখানে কিছু প্রতিকারও আছে। এই ভিডিওটির মাধ্যমে আমরা এমন কিছু উপায় সম্পর্কে জানবো যা Sex Addiction থেকে কমপক্ষে ৯০% মুক্তি পেতে সাহায্য করবে। তাই ভিডিওটি শেষ অব্দি দেখতে থাকুন-
প্রথমেই দেখে নেই Hyper Sexual Disorder বা sex addiction এর লক্ষণসমূহ-
(i) অতি মাত্রায় পর্ণ ভিডিও দেখা (Watching pornography)
(ii) মাল্টিপল অ্যাফেয়ার (Multiple Affair)
(iii) অনলাইন সেক্স এডিক্ট (online sex addict)
(iv) সেক্সূয়াল হ্যারেজিং (sexully harassing)
(v) দিনে বেশি সময় ধরে সেক্স চিন্তা
(vi) রেপ (rape)
(vii) অতিরিক্ত হস্তমৈথুন
(viii) পতিতাদের সাথে সম্পর্ক
Idea 1: Get red of trigger items
আপনাকে অবশ্যই পর্ণ, এডাল্ট পিকচার, এডাল্ট কনটেন্ট, এডাল্ট ম্যাগাজিন ইত্যাদি সেক্সুয়াল কন্টেন্টগুলো দেখা ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলতে হবে এবং এক সময় পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে।
যদি আপনার দাঁড়ায় এগুলো পরিহার করা কঠিন হয়ে যায়, তবে পিসি বা ল্যাপটপ আপনার ডাইনিং রুমে কিংবা খোলা ঘরে স্থাপন করবেন। এতে করে আপনার, Vulgar বা অশ্লিল সাইটগুলোতে যাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। পিসি ও ফোনে Porn Blocker ব্যবহার করতে পারেন।
Idea 2: Stay with funny and motivated person
বাংলায় একটি প্রবাদবাক্য আছে, “সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। “মন মানসিকতা ভালো রাখতে মজাদার ও অনুপ্রাণিত ব্যক্তিদের কোনো বিকল্প নেই।” কারণ এরা আপনাকে সবসময় হাসিখুশি ও অনুপ্রাণিত রাখবে।
এতে হতাশা থেকে মুক্তি পাবেন। আর হতাশাই সেক্স এডিকসন এর অন্যতম প্রধান কারণ। এমন বন্ধু বা লোকদের সাথে উঠাবসা করা যাবে না, যারা সবসময় অশ্লীল কথাবার্তা বলে। সেক্সুয়াল বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করে। ভালো বন্ধু ও পরিবারের লোকদের সঙ্গে যতটা পারা যায় সময় ব্যয় করতে হবে।
Idea 3: Thinking Positive
“We are addicted to our thoughts. We can’t change anything if we can not change our thinking.” অর্থাৎ আমরা আসক্ত হয়ে গিয়েছি আমাদের চিন্তার মাঝে। তাই আমরা যদি আমাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন না করি, তাহলে আমরা কোন কিছুই পরিবর্তন করতে পারব না।
সেক্স নিয়ে যত বেশি চিন্তা করবেন, সেটা ততই আপনাকে আরো বেশি ভাবাবে ও আসক্ত করে তুলবে। তাই এটাকে বায়োলজির ভাষায় চিন্তা করতে হবে। একজন ছেলে বা মেয়েকে দেখার পর তাকে নেগেটিভ দৃষ্টিতে না দেখে, একজন স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে বিবেচনা করুন। তার সৌন্দর্য নিয়ে কোনো ধরনের গবেষণা বা কমেন্ট করবেন না।
একটা বিষয় হয়তো খেয়াল করেছেন সবাই, যখন অনেক ধরনের চিন্তা মাথায় কাজ করে তখন সেক্সূয়ালি অনুভবটা কাজ করে না। কারণ আপনার ব্রেণ ওই চিন্তার প্রতি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। নিজের জীবনের লক্ষ্য পূরণে সচেষ্ট হতে হবে। Remove Girl Statement, Replace Goal Statement. যদি আপনি আপনার লক্ষ্য পূরণে সফল হন, তবে কাঙ্ক্ষিত মেয়ে আপনাকে অবশ্যই ধরা দিবে।
Idea 4: Why Sheet
একটি সাদা অথবা রঙিন পেজে বড় অক্ষরে আপনার খারাপ অভ্যাস, যেগুলো সেক্সের প্রতি আপনাকে আসক্ত করে সেগুলো একের পর এক লিখতে থাকবেন। হস্তমৈথুন করলে কি কি ক্ষতি হতে পারে, তার একটা লিস্ট তৈরি করবেন।
যখনি খারাপ চিন্তা মাথায় আসবে, ঠিক তখনি এই why sheet টি একপলক দেখে নিবেন। এতে করে আপনার মন ভয় পেয়ে যাবে এবং আপনি সেটি থেকে পরিত্রাণ পাবেন।
Idea 5: Keep Away from Excessive Masterbed
Medical Science এ Masterbed বা হস্তমৈথুন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অতিরিক্ত Masterbed এর ফলে Nerve system, Heart, Digestive system, urinary system এবং অন্যান্য system ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়াও মাথা ব্যথা, শরীর দুর্বলতা, স্মরণ শক্তি কমে যাওয়া, অকাল বীর্যপাত ইত্যাদি ভয়ানক রোগে আক্রান্তের ঝুকি থাকে।
আয়ুর্বেদ এর মতে -সিমেন (Semen) বা শুক্রানু অনেক Powerful পদার্থ, যদি এটাকে কন্ট্রোল করা যায়, তবে এটা শরীরের উর্ধাংশে চলে যায় এবং মস্তিষ্কের ব্রেন সেলসকে উর্বর করে।
হস্তমৈথুনে চরমভাবে এডিক্টেড হলে কখনোই একা থাকবেন না, ঘরে সময় কম কাটাবেন, বাইরে বেশি সময় কাটাবেন। জগিং করতে পারেন অথবা সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন আপনার পছন্দের জায়গা। যখনি আপনার হস্তমৈথুন এর ইচ্ছা করবে ঠিক তখনি ১৫-২০ টি বুক ডন দিয়ে নিন, এতে করে আপনার শরীর কিছুটা ক্লান্ত হয়ে যাবে। পাশাপাশি হস্তমৈথুনের ইচ্ছাশক্তিটাও কমে যাবে।
হস্তমৈথুন এর দিকে আকৃষ্ট করে এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলার সফল চেষ্টা করতে হবে। নিজের দায়িত্ব ও কাজের প্রতি পুরোপুরি মনোনিবেশ করাটাই বেশি উত্তম। প্রিয় মানুষের সাথে অথবা একাকি খোলা মাঠে, সবুজ ঘাসে খালি পায়ে পায়চারি, শরীর ও মন উভয়কেই সতেজ করে। হস্তমৈথুন আসক্তি থেকে বের হবার উত্তম উপায় এটি।
Idea 6: Prayer and meditation
সামাজিক আইন Social law ও ধর্মীয় ভয় Religious Fear এই দুটি কারণে মানুষ অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। অনৈতিক ও শারীরিক সম্পর্ক, নেশাদার দ্রব্য, মাস্টারবেশন ধর্মীয় দিক থেকে এসব সম্পুর্ণ নিষেধ। তাই সৃষ্টি কর্তাকে ভয় করে এসব কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত we should refrain from doing these acts fearing the creator।
সেই সাথে নিয়মিত প্রার্থনা, আপনার শরীর ও মনকে সতেজ রাখবে ও হতাশা দূর করবে। মন শান্ত রাখা, দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া, কাজ কর্মে মনোযোগ বৃদ্ধি, রাগ নিয়ন্ত্রণে মেডিটেশন অনেক গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মেডিটেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গুগল এবং ইউটিউব আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
Idea 7: Just Do it
Reptalian Brain Seeks pleasure avoid pains, অর্থাৎ রেপটালিয়ান ব্রেণ শারীরিক সুখের পিছনে দৌড়ায়। এটি Active হলে লিম্বিক ও নিওকর্টেক্স ব্রেণ শান্ত হয়ে যায়।
এতে করে মস্তিষ্কে খারাপ চিন্তাভাবনাগুলো বেশি Active হয়ে পড়ে এবং যেগুলো পরিহার করা খুবই কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু এই কঠিনকে জয় করার জন্য পরীক্ষিত এমন এক টিপস দিব যেটার Success Rate 100% যদি আপনি ঠিকভাবে মানতে পারেন।
একটু ভেবে দেখুন তো, মানূষ হিসেবে আমরা যত খারাপ কাজই করি না কেন, মসজিদ, মন্দির কিংবা গির্জায় গিয়ে তা কি করতে পারি? বেশিরভাগই আমরা এটা করতে পারি না।
মুসলিম ভাইরা, আপনারা কি টুপি মাথায় দিয়ে মিথ্যা কথা বলতে পারবেন? আজে-বাজে কথা বলতে ইচ্ছে হবে কী? মেয়েদের দিকে কি কুনজরে তাকাতে পারবেন? জানি, বেশিরভাগই এটা পারবেন না।
তাহলে যে যে সময় গুলোতে আপনার সেক্সূয়ালিটি বেশি অনুভূত হবে, নিজেকে কন্ট্রোল করতে কষ্ট হবে, সে সময় গুলোতে অজু করে মাথায় টুপি পড়ে নিবেন, মসজিদে কিংবা লাইব্রেরীতে সময় কাটাবেন, এভাবে যদি ৩০ দিন আপনি পালন করতে পারেন, তাহলে ধরে নিন আপনি ৯০% সফলতায় পৌছে গেছেন। আস্তে আস্তে আপনি স্বাভাবিক হয় উঠবেন।
হিন্দু ও অন্যান্য ভাইরাও খুজে বের করেন আপনার দূর্বলতা কোথায়? কোন বিষয় ও জায়গা আপনাকে কন্ট্রোল করতে পারে, সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। ৩০ দিনকে টার্গেট করেন কারণ Hal Elord বলেছেন, যে কোন বদ অভ্যাস দূর করার জন্য ৩০ দিনই যথেষ্ট।
আরো পড়ুন- ভালবাসা আসলে কি এবং কিভাবে ভালবাসতে হয়