হার না মানা জীবনের গল্প

হার না মানা জীবনের গল্প – Bangla Motivational Speech

হার না মানা জীবনের গল্প: প্রতিদিনের জীবনে আমাদের কত কিছু নিয়ে কমপ্লেইন। সৃষ্টিকর্তা আমাকে কেমন করলো না, কেন আমি আরেকটু লম্বা হলাম না, আমার মাথায় আরেক প্রচুর হলে কত হ্যান্ডসাম দেখাতো, যদি আমি আরেকটু বেশি ফর্সা হতাম তাহলে কি খুব বেশি ক্ষতি হতো।

প্রিয় পাঠক বিশ্বাস করুন, আপনার থেকে অনেক বেশি সমস্যায় থাকার পরেও এই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যারা তাদের জীবনকে অনেক সহজ করে নিয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে এমন ৫ জন মেয়েকে দেখাবো যাদের শরীরের নানান প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও তারা হার মেনে যায় নি।

এই আর্টিকেলটি আপনাকে একটু হলেও ভাবাতে বাধ্য করবে। সৃষ্টিকর্তার আপনাকে কতটা ভালো রেখেছে।

৫। নাসিমা বানু

ইন্ডিয়ার রাজস্থানে বসবাসকারী এই তরুণী জন্মের পর পরই চেহারায় কালো দাগ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে এই কালো দাগ তার পুরো চেহারাকে আবৃত করে ফেলে। স্কুল জীবনে অনেকে তাকে পোড়ামুখি বলে ব্যঙ্গ করে ডাকতো। তার এই মুখের দাগের কারণে তাকে কেউ বিয়ে করতে যায়নি। নাসিমা বানুর মতে, জীবনে যতই প্রতিকূলতা আসুক না কেন তাকে মনোবলের সাথে মোকাবেলা করতে হয়। একজন নারীর মনের জোর কত বেশি তা নাসিমা বানুকে না দেখলে বোঝা যেত না।

৪। জুলিয়ান

আফ্রিকার এই তরুণী খুব স্বাভাবিক পা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল। কিন্তু এক বছর বয়স থেকে তার পা বেঁকে যেতে শুরু করে। ১৪ বছর বয়সে তার পা এতটাই বেঁকে যায় যে তার হাঁটাচলাও বন্ধ হয়ে যায়। তার আত্মীয়স্বজনরাও তাকে সাপোর্ট দিচ্ছিল না। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তার তার স্কুলে যেতে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগত। তার এরকম হার না মানা মনোবল দেখে পরবর্তীতে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান তার পা অপারেশন করার দায়িত্ব নিয়ে নেয়। তারপর একটি সাকসেসফুল অপারেশন এর পর বর্তমানে জুলিয়ান স্বাভাবিক পা নিয়ে বড় হচ্ছে।

ধন্যবাদ, সেই দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে যারা এই মেয়েটিকে একটি স্বাভাবিক জীবন দিতে সাহায্য করেছে।

৩। লুইস ওয়েডারবার্ন

এই সুন্দরী তরুণীকে দেখলে যে কারো মন ভরে যাবে। সৃষ্টিকর্তা তাকে একটি সুন্দর চেহারা দান করলেও তার শরীরের অ্যাবনরমালিটি তাকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে। তার শরীরের হাড় একটির সাথে আরেকটি জোড়া লেগে যাচ্ছে। যার কারণে তার শরীর ধীরে ধীরে অচল হয়ে যাচ্ছে।

এমন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও লুইস ফ্যাশন এবং মডেল প্যাশন ছেড়ে দেননি। সে লণ্ডন ফ্যাশন উইক নিয়ে কাজ করছে একজন মডেল হিসেবে। সত্যিই তার মনোবল আকাশছোয়া। সে প্রমাণ করে দেখিয়েছে কোন ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আপনার ইচ্ছা পূরণকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।

২। আলাইকা ব্রাহল

আলাইকা ব্রাহল
আলাইকা ব্রাহল

জীবন যুদ্ধে হার না মানা আরেকজন নারী সৈনিক হচ্ছে আলাইকা ব্রাহল। জন্মগতভাবে তার মুখের চামড়া হাড়ের সাথে লেপ্টে ছিল। যার কারণে তার মুখের গরম স্বাভাবিক ছিলনা। তার মুখের এমন গড়নের কারণে তাকে জীবনে অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে। কিন্তু সে এসব কথায় কান না দিয়ে মডেলিং ক্যারিয়ারে অংশগ্রহণ করেছে। আর এর মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছে সকল সাহসী মানুষই সুন্দর।

নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য শুধুমাত্র অসীম অধ্যাবসায়ের প্রয়োজন।

১। কারলি হেনরোটি

কারলি হেনরোটি
কারলি হেনরোটি

কারলি হেনরোটি নামের এই ২৩ বছরের তরুণী একটি মারাত্মক রোগে ভুগেছে। এই রোগে শরীরের মাংস এবং টিস্যু হাড়ে রূপান্তরিত হয়ে যায়। কারলির শরীরের অবস্থা বর্তমানে এমন হয়েছে সে হাঁটতে চলতেও পারছে না। তার মুখের টিস্যুগুলোও চোয়ালের হাড়ের সাথে লেগে গিয়েছে। যার জন্য সে হাফ ইঞ্চিরও কম মুখ খুলতে পারে।

এইজন্য কথা বলতে পারাটাও তার জন্য এখন খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। এত কষ্টের মাঝেও সে খুব পজিটিভ এটিটিউড নিয়ে বেঁচে রয়েছে।

এখন বলুন তো প্রিয় পাঠক সৃষ্টিকর্তা কি আমাদেরকে এদের থেকে অনেক ভালো রেখেছে, তাইনা! তাহলে কি এর জন্য আমরা তার একটু শুকরিয়া আদায় করতে পারি না।

সবশেষে, আপনাদের সুন্দর এবং সুস্বাস্থ্য জীবন কামনা করছি। আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক করবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

আরো পড়ুন – সুখী হওয়ার উপায়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *