Bangla love letter: কোনো এক কোকিল ডাকা সকালে আপনার প্রিয় মানুষটি পকেটে একখানা কাগজ গুঁজে দিয়ে আড়চোখে আপনার দিকে চেয়ে মিটিমিটি হেসে বলে যে, “একা একা পড়ো কিন্তু!” দু’এক সেকেন্ডের জন্যে হলেও আপনার বুকের গহীন কোণে আনন্দের এক সমীরণ ঢেউ খেলে কি যাবে না?
হুম অবশ্যই একজন সাধারণ মানুষের এই অনুভূতিটা আসবে। শুধু কি তাই পৃথিবির সব বিখ্যাত ব্যক্তিরা কোন না কোনভাবে প্রেম ভালবাসা নিয়ে অসাধারণ সব উক্তি করে গেছেন। এমনি কিছু বিখ্যাত ব্যক্তির আবেগমাখা প্রেমপত্র এখন আমরা পড়ব।
জোসেফিনকে লেখা নেপোলিয়নের আবেগময় চিঠি
নেপোলিয়নের মতো তুখোড় যোদ্ধা কি করে একজন অসাধারণ প্রেমিক হতে পারেন সেটা তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে লেখা চিঠি না পড়লে বোঝা অসম্ভব! তিনি প্রায় ৭৫ হাজার চিঠি লিখেছেন যার বেশির ভাগ ছিল যুদ্ধের ময়দান থেকেই জোসেফিনকে। একজন যোদ্ধার মনেও যে কি পরিমাণ প্রেম থাকতে পারে তার প্রতীক বহন করে এই চিঠিগুলো।
আমার জোসেফিন,
গতকাল সারাটি বিকেল কাটিয়েছি তোমার পোট্রেটের দিকে চেয়ে থেকেই। কী করে পারো তুমি বলতো এই কঠোর মনের যোদ্ধার চোখেও জল আনতে? আমার হৃদয় যদি একটি পাত্র হয়, তবে সেই পাত্রে ধারণ করা পানীয়ের নাম দুঃখ। তুমি কি তা বোঝো জোসেফিন? আবার কবে তোমার আমার দেখা হবে? সে অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হতেই চায় না! সে অপেক্ষায়…
তোমারই
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
স্ত্রী ক্লেমিকে লেখা উইনস্টন চার্চিলের এক প্রেমপত্র
স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে বিয়ের পর প্রেম নাকি উবে যায়। এ কথাটিকে অসত্য প্রমাণ করেছিলেন উইনস্টন চার্চিল জুটি। তাদের হৃদয় ছিল এক অবিচ্ছিন্ন প্রেমসত্তা। তারই প্রমাণ মেলে মূলত স্ত্রী ক্লেমিকে লেখা চার্চিলের এক প্রেমপত্রের ছত্রে ছত্রে।
আমার প্রিয় ক্লেমি,
আমার মন পড়ে রয়েছে মাদ্রাজের ছোট্ট এক টেবিলে, যেখানে বসে বসে তুমি গত পত্রখানায় লিখেছো যে, আমি নাকি তোমার জীবনকে আলোকিত করেছি। চিঠিখানা পড়ে নির্বাক আমি বসে রইলাম কিছুক্ষণ। একমাত্র আমিই জানি, তোমার কাছে আমি কতটা ঋণী। আজ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে, তার সবটাই তো তোমারই দান। কত ঝড় এলো জীবনে। কিন্তু তুমিই আমায় শিখিয়েছো কী করে ঝড়ের রাতেও রত্ন কুঁড়াতে হয়। সব ঝড়ের রাতে কুড়ানো রত্ন জমিয়ে রেখেছি ক্লেমি তোমায় দেবো বলে। কবে আবার দেখা হবে আমাদের? তোমার স্মৃতি আর ভালবাসা নিয়েই আমার বেঁচে থাকার প্রতিটি নিঃশ্বাস পড়ে। কখনও বদলে যেওনা যেন।
একান্তই তোমার
চার্চিল
চার্লি ইয়ামসের বিয়ের প্রস্তাব চিরকুট
আমি এখন চৌত্রিশের কোঠায় দাঁড়ানো তোমার মায়াময় রূপের বাঁধনে বুক ভাঙা এক পাগল যুবক। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। এতটাই উন্মত্ত আমার এ ভালোবাসা। এখন চূড়ান্ত পরিণতির প্রহর গুনছে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে। আমার এ দরিদ্র ভালোবাসা হয়তো তোমাকে রাজপ্রাসাদের সুখ গড়ে দিতে পারবে না, তবুও আমৃত্যু চেষ্টা করে যাবে তোমার মুখের হাসি অম্লান, অক্ষত রাখতে। হে প্রেয়সী, দেবে কি আমাকে সে সুযোগ তোমার অনামিকায় আমার দেওয়া আংটি পরাতে? তোমার অনামিকা অঙ্গুলির আংটির মাপই আমার স্বপ্নের উত্তর।
উত্তরের প্রত্যাশী-
তোমারই অনেক অনেক ভালোবাসার
চার্লস
প্রেমিকার উদ্দেশ্যে সুরসম্রাট বেটোফোনের প্রেমপত্র
আমার দেবী,
গভীর দুঃখ আর না পাওয়ার বেদনার মাঝেই যদি থাকে প্রেমের সফলতা, তবে নিশ্চয় আমাদের প্রেম সফল। না দেখার কষ্ট, বিরহের যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই যে নেই তোমার-আমার মাঝে। প্রতিনিয়ত সুরের মাঝে তোমাকেই খুঁজে বেড়াই। কিন্তু হায়! অপ্রাপ্তি তো আর প্রাপ্তি হয়ে ধরা দেয় না! প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে আনন্দ খুঁজি। কিন্তু তোমার ধ্যান, সব দর্শনই মিছে মনে হয় যখন মনে পড়ে দিন শেষে আমরা রয়ে যাব যে যার মতো নিবাসে। দেবী, তুমি কেবল আমারই দেবী, এই জন্মে না হলেও পরজন্মে মিলন আমাদের হবেই। এই তো আর কটা দিন অপেক্ষা মাত্র। তুমি সাহসী না হলে, আমি সাহস করবো কোথা হতে?
ইতি তোমারই
বেটোফেন
বিকেলের সোনালি পড়ন্ত আলোকে সাক্ষী রেখে হাতে হাতে পৌঁছে যাওয়া সেসব প্রেমপত্র আজকের প্রজন্মের কাছে হয়তবা অচেনা। সময়ের দৌঁড়ে হয়তো চিঠিপত্র লেখার সময় হয়ে ওঠে না, তবুও যদি প্রিয় মানুষের জন্য সময় বের করে মনের না বলা কথাগুলো লিখেই ফেলেন, তবে পত্রটি প্রিয় মানুষটির হাতে পড়তেই দেখবেন কেমন এক ম্যাজিক ঘটে যায়!
আরো পড়ুন- মেয়েরা কেমন ছেলে পছন্দ করে জীবন সঙ্গীর জন্য