স্মার্টফোন কেনার সময়

স্মার্টফোন কেনার আগে জেনে নিন কিছু জরুরি টিপস

স্মার্টফোন কেনার আগে জেনে নিন কিছু জরুরি টিপস: ধারণা ছাড়াই ফোন কেনা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। কেননা স্মার্টফোন কিনতে গিয়ে পড়তে হয় নানা ধরনের বিপদে। অনেক পছন্দের ফোনটির জন্য যথেষ্ট অর্থ ব্যয় করেও অনেক সময় এটি বেশিদিন টিকে না।

তখন কপালে হাত দিয়ে একটাই চিন্তা মাথায় আসে-কেনো আগেভাগে জানলাম না- “ফোন কেনার আগে কোন দিকগুলোতে বেশি নজর দেয়া উচিত”। যখন আপনি পছন্দের সেটটি কিনতে যথেষ্ট খরচ করতে প্রস্তুত তখন ভালো সেট কিনতে দোষ কোথায়?

আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ার পর স্মার্টফোন কিনতে আপনার আর কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। তো চলুন শুরু করি-

সঠিক দাম যাচাই

পকেটে নাই টাকা ঘুরতে আইলাম ঢাকা-বললে চলবে না। কেননা দাম যত বেশি হয়-ফোন তত ভালো হয়। তবে একই মডেলের অন্য কোনো সংস্করণ খুব শিগগিরই বাজারে আসলে তা থেকে অতিরিক্ত কোন সুবিধা পাওয়া যায় কিনা মোবাইল ফোনসেট কেনার আগে তা অবশ্যই ভেবে নিন।

লেটেস্ট ডিজাইন

স্মার্টফোন কিনবেন আর ডিজাইন না হলে হয়। হ্যাঁ স্মার্টফোন কেনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি এর ডিজাইন। তাই আপনি কোন ডিজাইনের স্মার্টফোন পছন্দ করেন তা আগে থেকেই নিশ্চিত করতে হবে। কেননা আজকাল বাজারের সব স্মার্টফোনই বেশ ডিজাইনেবল। কাজেই নিজের রুচি এবং ব্যক্তিগত চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন পছন্দ করাই ভালো।

অপারেটিং সিস্টেম

বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস ৭, উইন্ডোজ স্মার্টফোনের জগতে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম। এক্ষেত্রে স্মার্টফোন কেনার পূর্বে আপনার পছন্দেরটি বেছে নিন। কারণ অপারেটিং সিস্টেমের ওপরই গোটা ফোনের সব কার্যক্রম নির্ধারিত হয়। তবে অ্যাণ্ড্র্যেড অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত স্মার্টফোন এর ফিচারগুলো অনেক সহজ এবং যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন।

থ্রি-জি নাকি ফোর-জি (3G/4G)

বাংলাদেশে চালু আছে থ্রি-জি কানেকশন চালু করা রয়েছে। আপনার নেট স্পিড এর গতি নির্ভর করে এর ওপর। এর থেকে আরো দ্রুত কানেকশন দেয় ফোর-জি। কিন্তু কানেকশনের দিকটি খেয়াল রেখে আপনি থ্রি-জি বা ফোর-জি সেট কিনতে পারেন। তবে এজন্য অবশ্যই আপনার ফোন ফোর-জি হতে হবে।

লাইটওয়েট ওজন (Weight)

স্মার্টফোন কেনার আগে ওজনের দিকটি একটু ভেবে দেখবেন। সাধারণত হালকা ওজনের সেটগুলো অনেকেই পছন্দ করেন। মোবাইল ফোন যত বড় হয়-এর ওজনও তত বেশি হয়। তবে এর ব্যাটারিও ওজন বেশ ওজন বৃদ্ধি করে।

স্ক্রিনের আকার (Display Size)

আজকাল বড় স্ক্রিনের মোবাইল বেশ জনপ্রিয়। তবে সুরক্ষার দিকটি বিবেচনা করলে ছোট স্ক্রিনের মোবাইল কেনা উচিত। এক্ষেত্রে চার, সাড়ে চার কিংবা পাঁচ ইঞ্চি পর্দার মোবাইল ফোনেরও বেশ চাহিদা রয়েছে।

ডিসপ্লের গুণগত মান (Quality of Display)

পর্দার গুণগত মান দেখে নেওয়াটা স্মার্টফোন কেনার সময় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফোনটির ডিসপ্লে সুপার অ্যালমন্ড কিনা তা নিশ্চিত হোন। কেননা টিএফটি ডিসপ্লের থেকে অ্যালমন্ড ডিসপ্লের রেজুলেশন ও টাচ্ সেনসিটিভিটি অনেক ভালো।

তবে বর্তমানে সবচেয়ে ভালো মানের ডিসপ্লে ১০৮০পি (১৯২০ x ১০৮০ পিক্সেলস) ফোনের দাম বেশ চড়া। ভিন্ন ভিন্ন কোণ থেকে দেখলে ছবি পরিষ্কার দেখা যায় কি না-এ বিষয়টি নিশ্চিত করুন। পক্ষান্তরে একটু কম দামের মোবাইলগুলোর ডিসপ্লে ৭২০পি-এর কম হয়ে থাকে।

প্রসেসর (Processor)

প্রসেসর হলো স্মার্টফোনের মস্তিষ্ক। সহজ কথায়, যার মধ্য দিয়ে সকল কাজ কর্ম প্রসেস হয় তাই প্রসেসর। অনেকেই এটি সম্পর্কে অবহিত নয় অথচ এটি উন্নত মানের না হলে আপনি ভালো মানের কোন গেমই খেলতে পারবেন না।

বর্তমানে বাজারে Dual Core, Quad Core, Hexa Core, Octa Core প্রসেসর সমৃদ্ধ স্মার্টফোন পাওয়া যায়। মনে রাখবেন, প্রসেসর যত বেশি গিগাহার্জ হবে আপনার ফোনের জন্য তত ভালো।

মিনিমাম ২ জিবি র‌্যাম

র‍্যামের ওপর নির্ভর করবে আপনার ফোন কত দ্রুত কাজ করবে? কাজেই ফোন কিনতে গেলে ২ জিবি র‌্যামের ফোন নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। তবে বর্তমানে আধুনিক মোবাইলগুলোতে ৩/৪/৫ জিবি পর্যন্ত র‌্যাম বাজারে নিয়ে এসেছে।

ব্যাটারির শক্তি (Power of Battery)

মোবাইল ফোনের ওপর ভিত্তি করে ব্যাটারির শক্তি নির্ধারিত করা হয়। সাধারণত বড় স্ক্রিনের মোবাইলগুলোর জন্য শক্তিশালী ব্যাটারি প্রয়োজন হয়। বর্তমানে বাজারে ৩০০০ এমএএইচ শক্তির ব্যাটারি বাজারে সবচেয়ে বেশি চালু রয়েছে।

ক্যামেরা কোয়ালিটি (Camera Quality)

স্মার্টফোন কিনবেন আর ছবি তুলবেন এমনটি হয় না। সামনে ও পেছনে মিলে ফোনটিতে মোট দুটি ক্যামেরা আছে কি না তা দেখে নিন। কেননা সামনের ক্যামেরা না থাকলে আপনি ভিডিও কল করতে কিংবা সেলফি তুলতে পারবেন না।

আপনি যদি ছবি তুলতে ভালোবাসে তাহলে পেছনের ক্যামেরাটি কমপক্ষে ৮ মেগাপিক্সেল আর সামনেরটি ৫ মেগাপিক্সেল এর ওপরে হলে ভালো হয়। পাশাপাশি ফোনটিতে ফ্ল্যাশ এর ব্যবস্থা আছে কিনা নিশ্চিত করুন। নতুবা আপনি রাতে ছবি তুলতে পারবেন না।

পপুলার রিভিউ ও রেটিং দেখুন

নেট কানেকশন বিভিন্ন রিভিউ সাইটে ঢুঁ মারতেই হয়। তবে ম্যালওয়্যারের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য পপুলার রিভিউ ও রেটিং সাইটে ঘোরাফেরা করবেন। আবার ফেসবুক মোবাইল রিভিউ গ্রুপ থেকে জেনে নিতে পারেন যারা অলরেডি ব্যবহার করে।

অ্যাক্সেসরিজ (Accessories)

সাধারণত সব মোবাইলের সঙ্গেই দেওয়া হয় অ্যাক্সেসরিজ। তবে এক্সেসরিজ দেখে ফোন পছন্দ করার কোনো দরকার নেই। স্মার্ট অ্যাক্সেসরিজগুলো বেশ আকর্ষণীয় দেখায়। পক্ষান্তরে ভালো মানের ফোনের অ্যাক্সেসরিজও বেশ ভালো হয়।

সফটওয়্যার আপডেট রাখা

ফোনের সফটওয়্যাগুলো প্রতিনিয়তই আপডেট হচ্ছে। আপডেট সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করলে ফোন দ্রুত ও ভালো কাজ করে। সেই সাথে আপনার ফোনটির স্থায়িত্বও বৃদ্ধি পাবে।

পাশাপাশি আপনার ফোন সাপোর্ট করে এমন সব সফটওয়্যারগুলো ইন্সটল রাখবেন। যে অ্যাপসগুলো প্রতিনিয়ত লাগে না সেগুলো ইন্সটল না রাখাই ভালো। কেননা এতে র‍্যাম এর উপর চাপ পড়বে এবং আপনার ফোন স্লো হয়ে যাবে। ফোন যতই ভালো হোক না কেন! বেশি বেশি গেম খেলা কোন ফোনের জন্যই ভালো নয়।

মেটাল বডির ফোন

পর্দাতে সহজে যাতে কোন দাগ না পড়ে কিংবা হাত থেকে পড়ে গেলেও যেন ভেঙে বা ফেটে না যায় এমন শক্তপোক্ত ফোনই বাছাই করা উচিত। পর্দাতে আপনি গরিলা গ্লাস স্ক্রিন পেপারটি ব্যবহার করতে পারেন।

কাস্টমার কেয়ার (Customer Care)

আপনার পছন্দের ফোনটি শুধু কিনলেই হবে না। আশেপাশে তাঁর কাস্টমার কেয়ার আছে কিনা এটা দেখাও জরুরি। কেননা পছন্দের ফোনটি ছেড়ে থাকতে একটুও মন চায় না। তাই কোন ধরনের সমস্যা হলে যাতে আপনি তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে পারেন- এজন্য কাস্টমার কেয়ার এর দিকটিও লক্ষ রাখুন।

ওয়ারেন্টি (Warranty)

কেনার সময় অবশ্যই ওয়্যারেন্টি সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।

সর্বোপরি-বাজারে যাওয়ার পূর্বেই আপনার পছন্দমতো ব্যাণ্ডের যাবতীয় তথ্য ও অনলাইন প্রাইজ জানার চেষ্টা করুন।

আরো পড়ুন- পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর ৫ রাইডিং দেখে গা শিউরাবে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *