সুখী হওয়ার উপায়

সুখী হওয়ার উপায় – হাসি খুশি থাকার উপায় | Become Happy

সুখী হওয়ার উপায় – হাসি খুশি থাকার উপায়: আপনার সাথে এরকম কতবার হয়েছে যে, আপনি হয়তো সবে মাত্র দু’দিন হলো সকালে উঠে দৌড়াতে যেতে শুরু করেছেন। এবার হঠাৎ একদিন এক বন্ধুর সাথে কথায় কথায় বলে ফেললেন, আমিতো এখন সকালে রোজ দৌড়াতে যাচ্ছি। এবার ভাই আমি একমাসের মধ্যে ৫ কেজি ওজন কমিয়েই ছাড়বো। আপনার সেই বন্ধু শুনে বলল, আরে বাহ! সেরা তো। আমিও আসলে মাঝে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কি বলতো, তিন দিন যাওয়ার পর এত লেদ লেগে যায় ভাই আর কন্টিনিউ করতে পারিনা। আর তার ঠিক দু তিন দিন পর থেকে কোন এক অজানা কারণে আপনিও আর সকালে উঠে দৌড়াতে যাওয়াটা কন্টিনিউ রাখতে পারেন না, এমনটা কেন ভাই জানেন?

রিসার্স বলছে, যখন আমরা আমাদের কোন ফিউচার গোলের ব্যাপারে অন্যদের সাথে আলোচনা করি, তখন সেই মুহূর্ত থেকেই আমাদের মধ্যে একটা গর্বিত বা তৃপ্তিদায়ক অনুভূতি কাজ করতে শুরু করে দেয়। যেটা আসলে সেই গোলটাকে অর্জন করার পর যে ধরনের অনুভূতি হওয়ার কথা, তার সঙ্গে প্রায় একই রকম। যার ফলে সেই ফিউচার গোল অর্জন করার আগেই শুধু মাত্র সেটার ব্যাপারে অন্যদের সাথে আলোচনা করে।

যখন আমরা সেই তৃপ্তিদায়ক অনুভূতিটা পেয়ে যাই। তখন আমাদের মধ্যে সেই গোলটাকে অর্জন করার খিদেটা অনেকখানি কমে যায়। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা সেই গোলটাকে অর্জন করার জন্য পরিশ্রম করাই বন্ধ করে দেই। সাইকোলজিষ্টরা এ ঘটনাটাকে বলেন, সোসাল রিয়ালিটি। তাই বুদ্ধি মানের কাজ এটাই গোলটাকে অর্জন করার পরেই একমাত্র খুব প্রয়োজন হলে তবেই সেটা নিয়ে অন্যদের সাথে আলোচনা করা উচিত।

আর তাছাড়া আপনি বড় বড় স্বপ্নের কথা বলে তারপর সেগুলো যদি কোনো কারণে পূরণ না করতে পারেন। তখন অসংখ্য এরকম মানুষগুলো ঘাপ্টি মেরে অপেক্ষায় বসে থাকবে। যারা সুযোগ পেলেই আপনার সেই ব্যর্থতাটাকে নিয়ে টোন কাটবে।

সো স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ১: Never share your future goals

হয়তো আপনি এবং আপনার এক বন্ধু প্রায়ই এদিক-ওদিক টুকটাক খেতে বা ঘুরতে বেড়ান। এতদিন আপনার সেই বন্ধু জানত যে, আপনার এবং তার ইনকাম মোটামুটি এক। তাই যখন যেখানে যা বিল হতো সেটা আপনারা দুজনেই সমান ভাবে ভাগ যোগ করে পে করতেন। এবার আপনি যে রিসেন্টলি চাকরিতে প্রমোশন পেয়েছেন, সেটা আর আপনার বন্ধু জানা ছিল না। কিন্তু যেদিন সেই এই বিষয়টা জানতে পারলো যে, এখন আপনার ইনকাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেদিন থেকে যখনই কোথাওবিল পে করতে হবে, হয়তো আপনাকে সেই বন্ধু আপনাকে বলবে, ভাই তোর এতো ইনকাম, বিলটা তো একটু তুইই পে করতে পারিস।

বা কোনদিন হয়তো, এসে বড় অংকের একটা টাকা ধার চেয়ে বসলো। আপনি জানেন যে এত টাকা ধার দিলে টাকা ফেরত পেতে আপনার বছর ঘুরে যাবে। কিন্তু আপনি নাও বলতে পারবেন না। কোনো বাহানা দিয়ে কাটিয়ে যাবেন সেটা মুশকিল। কারণ ওতো জানে এখন আপনার মাসিক ইনকাম সঠিক কত! ব্যাছ! ফেসে গেলেন। বা এর উল্টোটা হলেও বিপদ। হয়তো আপনার চাকরি চলে গেল বা আপনি নতুন কোনো একটা চাকরিতে জয়েন করলেন। সেখানে আপনার মাসিক বেতন আগের হয়তো অর্ধেক। এবার সেটা জানার পর যদি আপনি হুট হাট করে ওর কাছে এসে বড় অঙ্কের টাকা ধার চেয়ে বসেন। সেই ভয়তে আপনার সেই বন্ধু হয়তো আপনাকে ইগনোর করতে শুরু করে দিতে পারে।

টাকা কম থাকলেও বিপদ, আবার বেশি থাকলেও অন্য রকমের বিপদ। তাই আপনার কাছে ঠিক কত টাকা আছে বা আপনার এখন সঠিক মাসিক ইনকাম কত সেটা ঢাকঢোল পিটিয়ে সবাইকে জানানোর কোন দরকার নেই। কারণ এতে আপনার সমস্যা আরো বাড়বে ছাড়া কমবে না।

সো স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ২: Never share your financial situation

ভাবুন তো, সুপারম্যানের দুর্বলতা যে ক্রিপ্টোনাইট সেটা যদি সবাই চেনে না যেত। তাহলে কি কখনো ভিলেনগুলো এত সহজে সুপারম্যানকে ধরাশায়ী করতে পারত। তাই নিজের দুর্বলতা এবং গোপনিয়তা কখনোই অন্যের সাথে শেয়ার করা উচিত না। একমাত্র যদি আপনি কাউকে অন্ধের মত বিশ্বাস করতে পারেন, তবেই একমাত্র তাঁর সাথেই শেয়ার করা উচিত। যেমন ধরুন আপনার মা-বাবা। কিন্তু দুদিনের আলাপে অনেক সময় আমরা কাউকে প্রিয় বন্ধু বানিয়ে নিয়ে, তার সাথে নিজের সমস্ত দুর্বলতা এবং সিক্রেটগুলো শেয়ার করতে বসে যাই।

এই প্রিয় বন্ধুটি যে কখন অপ্রিয় শুত্রুতে পরিণত হয়ে যাবেন, তা আপনি টেরও পাবেন না। অন্যদিকে যদি কেউ আপনাকে বিশ্বাস করে তার সিক্রেট বা দুর্বলতার কথা শেয়ার করে তা সেগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করাটা কখনোই উচিত না। এতে আস্তে আস্তে বিশ্বাস করে কেউ আপনাকে কিছু বলতে চাইবে না। কারণ আস্তে আস্তে সবাই জেনে যাবে যে, আপনার পেট পাতলা রোগ আছে। আপনি কোন কথা নিজের মধ্যে চেপে রাখতে পারেন না।

সো স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ৩: Never share any weakness or secret

ভাবুন, আপনার ওয়াইফের সাথে আপনার ঝামেলা হলো, আর আপনার ওয়াইফের তো বলে ফেলো তোমার কাছে তো তোমার মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব এদের সবার জন্য টাইম আছে। শুধু আমার জন্যই তোমার কাছে কোন টাইম নেই। আর সেই কথাটা আপনি আপনার মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব সবার সাথে গিয়ে শেয়ার করে বসলেন। এবার পরে যখন আপনার ওয়াইফের মাথা একটু ঠান্ডা হলো।

তখন আপনি জানতে পারলেন, যে আসলে সেদিন তার অফিসে প্রচুর কাজের চাপ চলছিল। তাই সেদিন সে একটু ডিপ্রেস ছিল। আর সেই কারণেই এই কথাগুলো রাগের মাথায় বলে ফেলেছিল। এবার সেটা জানার পর আপনার এবং আপনার ওয়াইফের মধ্যে ঝামেলা মিটে গেল। কিন্তু আপনার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধরা আপনার ওয়াইফকে খারাপ ভাবতে শুরু করে দিলো। ফলে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিতে শুরু হয়ে গেল। তাই কারো সাথে কোন ঝগড়া হলে সেটা নিয়ে কখনোই অন্যদের সাথে আলোচনা করা উচিত না। এতে বিভিন্ন সম্পর্কের মধ্যে জটিলতা বেড়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ৪: Never share personal conflicts

ভাবুন, যখন কেউ আপনাকে মুখের উপর এরকম কিছু বলে, তুই না ভাই বহুদ ভাট বোকিস। বা সিঙ্গুলার কোনরকম ন্যাগেটিভা জাস্টম্যান্ট পাস করে। তখন আপনার মনের ভিতর তার প্রতি কি ধরনের অনুভূতি তৈরি হয়। আপনিও সুযোগ খুঁজতে শুরু করেন। কিভাবে তারও কোন একটা খুদ খুজে বার করা যায়। ইভেন কেউ যদি কোন ভুল কাজ করে তার পরও যদি আপনি তাকে এরকম ন্যাগেটিভ জাস্টম্যান্ট পাস্ট করেন। তাহলেও হয়তো সে সেটাকে হয়তো ভালো ভাবে নিবে না। আর ব্যাপারটা হচ্ছে কেউ যদি সত্যি ভাট বকে। তাহলে তাকে এটা বলাতে, যে তুই না ভাই বহুদ ভাট বকিস। তাতে সে ভাট বকা বন্ধ করে দিবে না। উল্টো বরং রেগে গিয়ে ভাট বকাটা বাড়িয়ে দেওয়ার সম্ভবনাই বেশি। তাই কারো ব্যাপারে কোন ন্যাগেটিভ জাস্টম্যান্ট কোন রকম লাভ হয় না। এতে শুধু শুত্রুর সংখ্যাই বেশি বাড়ে।

সো স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ৫: Never share negative judgements

এর মধ্যে থেকে বেশির ভাগ আইডিয়া আমি সান্টযু’র লেখা “THE ART OF WAR” বইটা থেকে শিখেছি।

সান্টযু ছিলেন প্রাচীন চিনের এক মিলিটারি জেনারেল এবং তিনি যিশু খ্রিস্টের জন্মের ৫০০ বছর আগে এই বইটি লিখেছিলেন। তারপর থেকে আজও অব্দি বড় বড় দেশের মিলিটারি জেনারেল এবং এটলিটরা এই বইটার প্রিন্সিপালগুলা ফলো করে চলেন।

নিশ্চয়ই পোস্টটি আপনার চিন্তাধারাকে একটু হলেও পরিবর্তনে সাহায্য করতে পেরেছে। যদি এতে আপনার উপকার হয় তাহলে পোস্টটি এখনই প্রিয়জন ও বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন।

আপনার একটি শেয়ারের মাধ্যমে সুখী হতে পারে হাজার জন মানুষ, মুখে হাসি ফুটতে পারে অসংখ্য মন খারাপ মানুষের মুখে।

আরো পড়ুন – মন খারাপ থাকলে কি করতে হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *