ঘরোয়া চিকিৎসা

ঘরোয়া চিকিৎসা – প্রাকৃতিক উপায়ে দূর করুন বিভিন্ন রোগ বালাই

ঘরোয়া চিকিৎসা: প্রাকৃতিক উপায়ে দূর করুন বিভিন্ন রোগ বালাই- স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্য ঠিক তো সব ঠিক। তাই আমাদের উচিত স্বাস্থ্যসচেতনতায় আরও একটু বেশি সক্রিয় হওয়া। এই আর্টিকেলে তুলে ধরব বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাদ্যের গুণাগুণ যেগুলো বিভিন্ন রোগ বালাই দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। চলুন জেনে নেয়া যাক আমাদের কমন রোগবালাই গুলোর প্রতিষেধক সম্পর্কে।

রসুন এর উপকারিতা

গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে। রসুন খাওয়ায় উচ্চ রক্তচাপের কিছু উপসর্গ ভাল দেখা যায়। খালি পেটে রসুন যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে কার্য সম্পাদন করে।

রসুন এর উপকারিতা

পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় যেমন- ডায়রিয়া। এই রসুন হজম ও ক্ষুধার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। স্ট্রেস বা চাপের কারনে আমাদের গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, খালি পেটে রসুন আমাদের স্নায়বিক চাপ কমিয়ে এ সকল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন কয়েককোয়া কাঁচা রসুন যৌবন দীর্ঘ স্থায়ি করে। যাদের পড়ন্ত যৌবনে চলে গিয়েছেন, তারা প্রতিদিন দু’কোয়া রসুন খাঁটি ঘি-এ ভেজে মাখন মাখিয়ে খেতে পারেন। আর খাওয়ার শেষে একটু গরম পানি বা দুধ খাওয়া উচিৎ, এতে ভাল ফল পাবেন।

যৌবন রক্ষার জন্য রসুন অন্যভাবেও খাওয়া যায়। কাঁচা আমলকির রস দুই-এক চামচ নিয়ে সাথে দুই কোয়া রসুন বাটা খাওয়া যায়। এতে স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়। ঠান্ডা লাগলে রসুন খান। এছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ঠাণ্ডা কাশি দূর করতে সহায়ক।

পেঁয়াজের ভেষজ গুন

হাঁপানিতে পেঁয়াজ খান। শ্বাসনালীর সংকোচন রোধে পেঁয়াজ ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এছাড়াও হাঁপানি রোগীর খাবার হবে পুষ্টকর, সুষম এবং হালকা ধরনের। লাল, হলুদ ফলমূল, শাকসবজি হাঁপানি জন্য ভাল খাবার। কারণ এতে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন থাকে যা আমাদের ফুসফুসকে শক্তিশালী করে। সাধারণত ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার খেলে ফুসফুস ভাল থাকে।

পেঁয়াজের ভেষজ গুন

পেয়াজ হার্ট শক্ত করে। হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক পেঁয়াজ। শুক্রানুকে শক্তিশালী করে পেঁয়াজ তাই পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যর জন্য পেয়াজ খাওয়া উচিত।

রক্তাল্পতার সমস্যার ক্ষেত্রে পেঁয়াজ বেশ উপযোগী। যারা অনিদ্রায় ভোগেন তারা নিয়মিত পেয়াজ খেতে পারেন। কারণ পেঁয়াজ খেলে ভালো ঘুম হয়। যাদের মাইগ্যেইন আছে তাদের জন্য পেয়াজ উত্তম। মাথা ব্যথা কমাতে পেয়াজ সাহায্য করে।

চুলের যত্নে এটা ব্যাবহার করতে পারেন। যাদের চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে তাদের প্রচুর পেঁয়াজ খাওয়া উচিত। নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজ সবচেয়ে কার্যকরি ভূমিকা রাখে।

চায়ের উপকারিতা

চায়ে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপার্টিজ সহ এমন কিছু উপাদান, যা প্রস্টেট, কলোরেকটাল, ব্লাডার, ওরাল এবং ওভারিয়ান ক্যান্সারকে দূরে রাখতে পারে। আবার লাল চা শরীরের যে কোনও অংশে ম্যালিগনেন্ট টিউমারের বৃদ্ধি আটকাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

চায়ের উপকারিতা

লাল চায়ে ক্যাফিনের পরিমাণ কম থাকায় এটি রক্তচলাচলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এতে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে স্ট্রেস কমে। গবেষণায় দেখা গেছে এক মাস টানা যদি লাল চা পারকিনস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমায়। চায়ে টেনিস নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা নানা ধরনের ক্ষতিকর ভাইরাসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে সহজে কোনও রোগ ছুঁতে পারে না।

চা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগই পায় না তবে দুধ চা মেদ বাড়াবে। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে লাল চায়ের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমিয়ে দেয়। চায়ে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা স্ট্রেস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাঁধাকপির উপকারিতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

পাকস্থলির আলসার ও পেপটিক আলসার প্রতিরোধে বাঁধাকপির রস আলসারের জন্য সবচেয়ে উপকারী প্রাকৃতিক ওষুধ। নিয়মিত বাঁধাকপি ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়াম যা হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। নিয়মিত বাঁধাকপি খেলে বার্ধক্যজনিত হাড়ের সমস্যার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।

বাঁধাকপির উপকারিতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের ভিটামিনই আছে। যেমন- রিবোফ্লোভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, থায়ামিন, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি ও কে। এছাড়া আয়রন, ক্যালসিয়াম, সালফার, ফসফরাস সহ আছে প্রয়োজনীয় সব খাদ্য উপাদান রয়েছে এতে। পুষ্টিবিদদের মতে, বাঁধাকপি খেলে শরীরে নানা ধরনের উপকার পাওয়া যায় এবং রোগ প্রতিরোধ বাড়ে।

যাদের রক্তস্বল্পতা আছে, বাধাকপি তার জন্য অবশ্য খাদ্য। এতে আছে প্রচুর লৌহ। বাঁধাকপির আছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণ। যা হাড় ও হাড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা প্রশমনে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বাধাকপিতে থাকা ভিটামিন সি ও মিনারেল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা

শরীরে পেপের উপকারিতা

পেঁপে এমন একটি সর্বজনীন ফল যা প্রায় সব ঋতুতেই পাওয়া যায়। আর এই পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি। পেঁপেতে থাকা এই ভিটামিনগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যুদ্ধ করে ছোয়াচেগুলোর বিরুদ্ধে, দাঁত, চুল, ত্বকের জন্য বয়ে আনে সুফল। বৃদ্ধ বয়সকেও দূরে ঠেলে দেওয়ার উপাদান অ্যান্টি অ্যাজিং ফ্যাক্টর রয়েছে পেঁপেতে।

শরীরে পেপের উপকারিতা

বদ হজমের রোগিদের পাকা পেঁপে খুব উপকার কারণ এতে হজমশক্তি বাড়ায়। পাঁকা পেপে মুখে রুচি বাড়ায়, সাথে সাথে খিদে বাড়ে তাছাড়া পাঁকা পেপে কোষ্ট পরিস্কার করে এবং বায়ু নাস করে। এ ছাড়াও পেপে অর্শ রোগের ক্ষেত্রেও বেশ উপকারি। কাঁচা পেঁপের আঠা বীজ কৃমিনাশক। কাঁচা পেঁপের আঠা অর্শ ও জন্ডিস সহ লিবারের নানা রোগ ভালো হয়। পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই আপনার কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আরো পড়ুন- কিভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধির করা যায় ঘরোয়া উপায়ে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *